০১ নভেম্বর ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান বিপ্লবের

মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান বিপ্লবের

‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’- এই চিরন্তন বাণীকে সামনে রেখে ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৫টায় বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে এই আয়োজন হয়।

চারণের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি প্রদীপ সরকারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন বাসদের নারায়ণগঞ্জ জেলা সদস্য সচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি কবি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মনিসুপান্থ, চারণের জেলা সদস্য সেলিম আলাদীন, বেলাল হোসাইন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

আলোচনায় আবু নাঈম খান বিপ্লব বলেন, “ফকির লালন ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার লোকদার্শনিক। তিনি জাত-পাত, ধর্মীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে মানবতার জয়গান গেয়েছিলেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অভাব থাকলেও তিনি সমাজের অন্তজ শ্রেণির ভাবসম্পদ ধারণ করে মানবমুক্তির কথা বলেছিলেন।”

তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হলেও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা উচ্ছেদ হয়নি। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান ঘটেছে। এই ধর্মান্ধ গোষ্ঠী মাজার, মন্দির, পীরের দরগা, লালনের আখড়া ও মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ভাঙচুর করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে।”

বিপ্লব অভিযোগ করেন, “রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী সারাদেশে মব সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে গণপিটুনিতে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও নারী শিল্পীদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে। সরকারের নীরবতা গণঅভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।”

তিনি বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ’৭২ সালের সংবিধানের মূলনীতি পরিত্যাগ করে জুলাই সনদ তৈরি করেছে, যা জনগণের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। বাসদসহ বামপন্থীরা তাই এই সনদে স্বাক্ষর করছে না। সংস্কৃতি কর্মীরাও এ অবস্থানকে সমর্থন করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।”

আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি পুঁজিবাদী শোষণ, সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ও মৌলবাদী আস্ফালনের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে অধঃপতিত বুর্জোয়া অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সংস্কৃতি কর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “লালনের দর্শন আজও প্রাসঙ্গিক, কারণ এটি বিভেদের নয়- মিলনের দর্শন। এই দর্শনই পারে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ দূর করে মানবতার সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে।”

সর্বশেষ

জনপ্রিয়