২১ অক্টোবর ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৩:৩৩, ২০ অক্টোবর ২০২৫

খানপুরে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবককে মারধর, হাসপাতালে মৃত্যু

খানপুরে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবককে মারধর, হাসপাতালে মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে ধর্ষণের অভিযোগে বাসা থেকে তুলে নিয়ে এক যুবককে মারধরের ৮ ঘন্টা পর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সোমবার (২০ অক্টোবর) রাত আটটার দিকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে জানান এ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. শাহাদাত হোসেন।

নিহত ব্যক্তির নাম আবু হানিফ। পেশায় নিরাপত্তা প্রহরী ৩০ বছর বয়সী হানিফ বাগেরহাটের শরণখোলার আবুল কালামের ছেলে।

এর আগে বিকেল তিনটার দিকে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় এলাকার কয়েকজন লোক হাসপাতালে রেখে চলে যান বলেও জানান এ চিকিৎসক।

“সন্ধ্যা ছয়টায় পরিবারের লোকজন হাসপাতালে আসেন। নিহতের শরীর ও মাথায় গুরুতর জখম ছিল।”

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, দুপুর ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে এলাকার কয়েকজন যুবক মারধর করে। বাসা থেকে তুলে নিয়ে খানপুর জোড়া ট্যাংকি এলাকায় তাকে মারধর করা হয়।

দুপুর বারোটার দিকে হানিফ বাসায় বিছানায় শুয়ে ছিলেন বলে জানান তার মেজোবোন রাবেয়া।

“এলাকার কিছু ছেলে বাসায় এসেই ভাইরে মারতে মারতে নিয়ে চলে যায়। আমাদের কোনো বাধা শোনেনি, কী কারণে মারতেছে তাও বলেনি। অনেক পরে বলতেছে সে (হানিফ) নাকি কোন বাচ্চারে ধর্ষণ করতে চাইছে।”

নিহতের ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, “শুরু থেকে আমি ছিলাম না। আমি ছিলাম ডিউটিতে। দুপুরে আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, এলাকার কিছু যুবক ছেলে ঝামেলা করতেছে। ফোন পাইয়া আমি বাড়িতে আসি। আমি আইসা বাসায় কাউরে পাই নাই। পরে আবারও ফোন দিলে আবার আসি। তখন দেখি, আমার ওয়াইফরে ধমকাইয়া বাসা থেকে নামাইতেছে।”

“পরে তারা আমাকেও ধইরা খানপুরে ওয়াসার অফিসের সামনে নিয়া আসে। তখন দেখি, আমার সম্বন্ধিরে (হানিফ) ওয়াসার ভিতরে বসায়া রাখসে। ১০-১২ জন যুবক পোলাপান ছিল। তাদের মধ্যে পাশের বাড়ির অভি নামে স্থানীয় একজনরে চিনছি। কিছুক্ষন পরেই তারা হানিফ ভাইরে অটোতে তুইলা নিয়ে কোথায় যেন চলে যায়। অনেক পরে আমরা তারে হাসপাতালে পাই”, যোগ করেন ইব্রাহিম।

হানিফ খানপুরেরই একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার স্ত্রী তিন শিশু সন্তানকে নিয়ে কয়েকদিন আগো গ্রামের বাড়িতে গেছেন বলে জানান নিহতের স্বজনরা। 

হাসপাতাল চত্বরে কাঁদতে কাঁদতে নিহতের বাবা আবুল কালাম বলেন, “আমার ছেলে ক্রাইম করলে তারে শাস্তি দিবো আইনে। কিন্তু তারে মাইরা ফেললো কোন যুক্তিতে! আমি এর বিচার চাই।”

এ ঘটনার বিস্তারিত জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানান সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নাছির বলেন, “ধর্ষণচেষ্টার কোনো অভিযোগ আগে আমাদের থানায় কেউ করেনি। পুলিশ মরদেহ হাসপাতালে পায়। ধর্ষণের আসলেই কোনো চেষ্টা হয়েছে কিনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ কাজ করছে।”

সর্বশেষ

জনপ্রিয়