শিক্ষার উন্নয়নে সম্মিলিত পদক্ষেপের আহ্বান
নারায়ণগঞ্জে এইএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যায়ের কারণ ও উত্তরণে করণীয় সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমির থিয়েটার হলে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শোয়াইব আহমেদ খান। গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির ও উপসচিব সাবিনা ইয়াসমিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শোয়াইব আহমেদ খান বলেন, “জাতীয়ভাবে পাশের হার ৫৮ শতাংশ, আর নারায়ণগঞ্জে ৫২ শতাংশ। এখানে কিছুটা ব্যবধান তৈরি হয়েছে। করোনা মহামারি ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান- এই দুই ঘটনার প্রভাবেই শিক্ষার ছন্দে পতন ঘটেছে। এজন্য ফল কিছুটা খারাপ হলেও এটি কোনো ‘বিপর্যয়’ নয়, বরং একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ।”
তিনি আরও বলেন, “এবারের পরীক্ষায় প্রশ্ন প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। সরকার বা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো চাপ বা নির্দেশনা ছিল না। এই বাস্তব ফলাফলই আমাদের প্রকৃত শিক্ষাব্যবস্থার প্রতিফলন।”

শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, “আগে ছাত্ররা শিক্ষকদের ভয় পেত, এখন অনেক সময় শিক্ষকই ছাত্রদের ভয় পান। এতে শিক্ষাব্যবস্থায় একটি দূরত্ব তৈরি হয়েছে, যা খুবই ক্ষতিকর। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটি- সবাই মিলে যদি সম্মিলিতভাবে কাজ করি, তাহলে শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব।”
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, “নারায়ণগঞ্জে এ বছর ২২ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়, এর মধ্যে ১১ হাজার শিক্ষার্থী ফেল করেছে- এটি আমাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়।”
তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, “সন্তানকে জোর করে পড়ালে হয়তো পাশ করানো যাবে, কিন্তু সুশিক্ষিত মানুষ তৈরি হবে না। সন্তানদের প্রতিযোগিতার ঘোড়ায় পরিণত না করে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন, জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান, নারায়ণগঞ্জ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও শিক্ষাবিদ রুমন রেজা, বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, মহানগর জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল ইসলাম, এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল আমিন, ইসলামী আন্দোলন মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, খেলাফত মজলিস মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস আহমেদ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা শিক্ষার্থীর মানোন্নয়নে শিক্ষক, অভিভাবক ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।





































