‘শিক্ষা, কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে’
নারায়ণগঞ্জ জেলা গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল ইসলাম বলেছেন, “রাষ্ট্র কেন অন্তত নাগরিকদের বারো ক্লাস পর্যন্ত শিক্ষার দায়িত্ব নিবে না? আমরা দেখেছি শিক্ষা, কৃষি ও স্বাস্থ্য- এই খাতগুলোকে পুরোপুরি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ যার সামর্থ্য আছে, সে কিনবে; যার নেই, সে বঞ্চিত থাকবে। অথচ সংবিধানে এগুলো নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে উল্লেখ আছে।”
তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্র যদি নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে তার অস্তিত্বের প্রয়োজনীয়তাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।”
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির থিয়েটার হলে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তরিকুল ইসলাম বলেন, “চলতি অর্থবছরে শিক্ষাখাতে মাত্র ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা আগের চেয়ে কম। এই সামান্য বরাদ্দ দিয়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। এবারের শিক্ষার ফলাফল আমাদের প্রকৃত অবস্থার প্রতিফলন, কিন্তু এটি আশাব্যঞ্জক নয়- বরং উদ্বেগজনক। কারণ এই শিক্ষা বাস্তব জীবনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”
তিনি আরও বলেন, “গত বিশ বছরের তুলনায় এখনকার শিক্ষার মান অনেক নিচে নেমে গেছে। শিক্ষা হচ্ছে ইনভেস্টমেন্ট, কিন্তু রাষ্ট্র এটিকে ব্যয়ের খাত হিসেবে দেখছে।”
নারায়ণগঞ্জের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই নগরীতে শ্রমের দাম অনেক কম, কর্মসংস্থান বলতে কিছু নেই। অনার্স-মাস্টার্স পাস করা উচ্চশিক্ষিত তরুণদের একটি বড় অংশ বেকার। রাষ্ট্র উদ্যোক্তা তৈরি করছে না, বরং কর্মসংস্থান সৃষ্টির দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। শিক্ষাকে সামগ্রিকভাবে দেখতে হবে, শুধু বইপড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না।”
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শোয়াইব আহমেদ খান। গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির ও উপসচিব সাবিনা ইয়াসমিন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন, জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান, নারায়ণগঞ্জ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও শিক্ষাবিদ রুমন রেজা, বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, মহানগর জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ, এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল আমিন, ইসলামী আন্দোলন মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, খেলাফত মজলিস মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস আহমেদ প্রমুখ।





































