২৪ নভেম্বর ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৯:৪৮, ২৪ নভেম্বর ২০২৫

দুই দিন ধরে গ্যাস নেই: ভোগান্তিতে কয়েকশʼ পরিবার-কারখানা

দুই দিন ধরে গ্যাস নেই: ভোগান্তিতে কয়েকশʼ পরিবার-কারখানা

ফেটে যাওয়া পাইপলাইন মেরামত না হওয়ায় দুই দিনের বেশি সময় ধরে গ্যাসহীন রয়েছে নারায়ণগঞ্জের বিসিক, ফতুল্লা, কাশীপুর, এনায়েতনগর, দেওভোগ, মাসদাইর, ইসদাইরসহ নগরীর বড় অংশ। আবাসিক পরিবার থেকে শিল্পকারখানা—সবখানে নেমে এসেছে চরম ভোগান্তি।

গত শনিবার সন্ধ্যায় পঞ্চবটী–মুক্তারপুর উড়ালসড়কের শাসনগাঁও এলাকায় পাইলিংয়ের সময় তিতাসের প্রধান গ্যাস সরবরাহ লাইন ফেটে যায়। এরপর থেকেই পুরো এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তিতাস কর্তৃপক্ষ। রোববার সকালে অল্প চাপে কিছু সময় গ্যাস সরবরাহ সচল রাখলেও মেরামতের কাজের জন্য পরে আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়।

সোমবার দুপুরে গলাচিপা মোড়ে কথা হয় আমলপাড়ার বাসিন্দা মিঠু ভূইয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, “দুই দিন ধরে চুলা জ্বলে না। প্রতিবেলাতেই পরিবারের চারজনের জন্য খাবার কিনতে বাধ্য হয়েছি।”

জামতলা এলাকার মিষ্টি বেগম জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই গ্যাস নেই। আবাসিক ভবনের ছাদে কাঠ পুড়িয়ে রান্না করতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি।

দুʼদিন ধরে দুʼবেলার রান্না বৈদ্যুতিক চুলায় করছেন বলে জানান কাশীপুরের বাসিন্দা কুলসুম বেগম।

“সকালের নাশতা বাইরে থেকে এনে খাচ্ছি”, বলেন তিনি।

শুধু আবাসিক ভোক্তাই নন, গ্যাস সংকটে বিপাকে পড়েছে শিল্পকারখানাগুলোও। নগরীর পুলিশ লাইন এলাকার রহমান গার্মেন্টসের সিনিয়র ডিজিএম শিহাব উদ্দিন আহমেদ জানান, ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হয়। “২৩ ও ২৪ নভেম্বরও ডাইং সেকশন সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। দুই দিনে প্রায় ৩৬ টন কম প্রডাকশন হয়েছে। প্রতিদিন আমরা ১৪ টন ফেব্রিক ডাইং করি। আয়রন সেকশনও বন্ধ ছিল—শুধু সুইং বিভাগ চালু ছিল,” বলেন তিনি।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের ব্যবস্থাপক মশিউর রহমান জানান, পাইপলাইন ফেটে যাওয়ার খবর পেয়েই কাজ শুরু করা হয়। রবিবার খননযন্ত্র দিয়ে ২৫ ফুট নিচে ক্ষতিগ্রস্ত প্রধান পাইপলাইনের অংশ খুঁড়ে তুলে আনা হয়। সোমবার ওই অংশের চারদিকে ভারী লোহার প্লেট বসিয়ে সুরক্ষাবেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে, যাতে মাটি ধসে না পড়ে।

“ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতের কাজ চলছে। খুব দ্রুতই গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করা যাবে বলে আশা করছি,” বলেন তিনি।

গত শনিবার সন্ধ্যায় উড়ালসড়কের গাঁথুনি করার সময় পাইপলাইন ফেটে যাওয়ার পর তীব্র শব্দে গ্যাস বের হতে থাকে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে তাৎক্ষণিকভাবে জেলার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তিতাস।
এর আগেও একাধিকবার এ প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে তিতাসের পাইপলাইন ফেটে যাবার মতো ঘটনা ঘটেছে। পরে লাইনগুলো মেরামত করে তিতাস কর্তৃপক্ষ। 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়