১৭ জুলাই ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২২:১৩, ১৬ জুলাই ২০২৫

সমাজ পরিবর্তনে শহীদদের ত্যাগ ধারণ করতে হবে: ডিসি

সমাজ পরিবর্তনে শহীদদের ত্যাগ ধারণ করতে হবে: ডিসি

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেছেন, “আবু সাঈদের মৃত্যু সকলের বিবেককে নাড়া দিয়েছিল, আবু সাঈদ নিজের বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিল গুলির সামনে। তার বুকে কোন ভয় ছিল না, আবু সাঈদের মতো মুগ্ধ, আমাদের আদিল, রিয়া গোপসহ শত শত শহীদ ভাইয়েরা যা চেয়েছিল আমরা কি সেই বাংলাদেশ গঠন করতে পেরেছি? নাকি আমরা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে ব্যস্ত?”

বুধবার (১৬ জুলাই) বিকাল সাড়ে তিনটায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ উপলক্ষে জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, “যারা আমাদের জন্য জীবন উৎসর্গ করে দিতে পারলো, আমরা যদি নিজেদের স্বার্থকে আত্মত্যাগ করতে না পারি, শহীদদের আত্মত্যাগ বুকে ধারণ করতে না পারি, তাহলে অনেক কথার কথা, কাজ হবে কিন্তু এই সমাজের পরিবর্তন হবে না। যারা জীবন দিয়েছে তাদের কোনো স্বার্থ ছিল না। এই যে আমাদের বীর ভাইয়েরা যারা গুলি খেয়ে শহীদ হলো, আহত হয়ে আছে, তাদের সামনে কি নিয়ে দাঁড়াব, নিজেদেরকে প্রশ্ন করতে হবে। আমরা যদি নিজেরা পরিবর্তন হতে না পারি, যদি ব্যক্তিস্বার্থ বিসর্জন দিতে না পারি, তাহলে কিন্তু এই রক্তঝরা বন্ধ হবে না।

তিনি আরও বলেন, “আমরা কেউ চাই না আমাদের সন্তানদের এইভাবে মৃত্যু হোক। আদিলের বাবাও চাননি, কিন্তু উনি শিকার হয়েছেন। কেন শিকার হয়েছেন সেটা আমাদের ভাবতে হবে, না হলে একই পরিণতি আমাদেরও হবে।”

সভায় মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, “কোন দল বা ব্যক্তির শোককে বিসর্জন করতে গিয়ে, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের থেকে আগস্ট সরিয়ে দেওয়া হবে। সেটা আমরা কেউ মেনে নিতে পারব না। ১৫ আগস্টের জন্য আমাদের ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দিবো না। অতএব ‘জুলাই আগস্ট বিপ্লব’ ও ‘জুলাই আগস্ট শহীদ দিবস’ এই বাক্যটি  সংযুক্ত করার আহ্বান জানাই।”

সভায় জালকুড়ি এলাকায় শহীদ আদিলের বাবা মো. আবুল কালাম শহীদদের কবরগুলো সংরক্ষণের দাবি জানান।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইনের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, আনসার-ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট কানিজ ফারজানা শান্তা, সিভিল সার্জন ডা. এএফএম মুশিউর রহমান, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আসাদুজ্জামান সরদার, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, মহানগর জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা মাঈনুদ্দিন আহমাদ, বর্তমান আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, ইসলামী আন্দোলন মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলার সদস্য সচিব জাবেদ আলম, মহানগরের আহ্বায়ক মাহফুজ খান প্রমুখ।

সভার শুরুতে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। শেষে শহীদ পরিবারের মাঝে উপহার সমগ্রী বিতরণ করা হয়।

এছাড়া, সকল শহীদের জন্য মসজিদ মন্দির ও গির্জায় প্রার্থনা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়