ছাত্র-জনতার উপর শামীম ওসমান ও তার বাহিনীর গুলির ছবি ভাইরাল

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নারায়ণগঞ্জে আন্দোলনকারীদের উপর প্রকাশ্যে গুলি চালিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও তার অনুসারী আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রায় ১ বছর সেই সময়কার অনেকগুলো ছবি প্রকাশ করেছেন জুলকারনাইন সায়ের খান।। নেটিজেনরা ছবিগুলো শেয়ার করে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে কাতার ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার অনুসন্ধ্যানি সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করলে ছবিগুলো ভাইরাল এবং দ্রুত শেয়ার হতে থাকে। এ পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার নেটিজেন পোস্টটি শেয়ার করেছেন।
জুলকারনাইন তার স্ট্যাটাসে বলেন, ‘১৯ জুলাই ২০২৪, নারায়ণগঞ্জ শহরে শামীম ওসমানের নেতৃত্বে —অয়ন ওসমান, তানভীর আহম্মেদ টিটু, খোকন সাহা, এসএম রানা, শাহ নিজাম, সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটু, কাওসার আহমেদের মদদে সংগঠিত হামলার এই ছবিগুলো তুলেছিলেন পারভেজ আসিফ আহমেদ উৎস। নিজ ক্যামেরায় এসকল ছবি ধারণ করার সময় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে ওসমান বাহিনী এবং তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহতও হন। প্রায় ১ বছর পর প্রকাশিত এসব ছবিতে আওয়ামী লীগ এবং এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের কর্মীদের সশস্ত্র অবস্থায় আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে। আপনার এই সাহসীকতাকে শ্রদ্ধা ও ধন্যবাদ পারভেজ আসিফ।’
জুলকারনাইনের শেয়ার করা ছবিগুলোতে শামীম ওসমানের নেতৃত্বে অস্ত্র হাতে তার নেতাকর্মীদের দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সাংবাদিকরা জানান, গত বছরের ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের দমনে পুলিশের পাশাপাশি সড়কে নেমে আসেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ওই সময়ের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের উপর সশস্ত্র হামলা চালায় তার অনুসারী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কয়েকশʼ নেতা-কর্মী। শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলি ছুড়তে থাকেন তারা।
সেদিন ধারণ করা একাধিক ভিডিও ও স্থিরচিত্রে শামীম ওসমান, তার ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন, ভাতিজা আজমেরী ওসমান, শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটু, ছেলে অয়নের শ্বশুড় ফয়েজউদ্দিন লাভলু, লাভলুর ছেলে মিনহাজুল ইসলাম ভিকি, শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতা শাহ নিজাম, ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান রিয়াদ, রাফেল প্রধান, আহমেদ কাউসার, সোহানুর রহমান শুভ্রসহ কয়েকজনকে গুলি চালাতে দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা বলেন, সেদিন ছিল শুক্রবার, জুমার নামাজের পরপরই চাষাঢ়া থেকে গাড়িবহর নিয়ে বের হন শামীম ওসমান। পরে বঙ্গবন্ধু সড়কের অন্তত দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কয়েক দফায় মহড়া দিয়ে গুলি চালান তারা। অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও ধারালো রাম দা, চায়নিজ কুড়ালও ছিল হামলাকীদের হাতে।