বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে প্রবীণ-তরুণের লড়াই

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন নারায়ণগঞ্জের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা। দলীয় কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশগ্রহণ, মাঠের আন্দোলনে সক্রিয়তা এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ- এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিজেদের প্রার্থিতার জানান দিচ্ছেন। মনোনয়ন দৌড়ে পুরনো, পরীক্ষিত নেতৃত্বের পাশাপাশি তরুণ, উদীয়মান এবং ব্যবসায়ী নেতারাও নিজেদের অবস্থান জানান দিতে শুরু করেছেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা পাঁচটি আসন নিয়ে গঠিত এবং রাজধানীর পাশের এ জেলার প্রতিটি আসনই রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
একেক আসনে একেক রকম প্রার্থী ও রাজনৈতিক সমীকরণ, আবার কোনো কোনো আসনে মনোনয়ন ঘিরে তৈরি হয়েছে দ্বন্দ্ব ও বিতর্কও। জেলা থেকে শুরু করে মহানগর, উপজেলা সব ইউনিটেই দলীয় মনোনয়নের জন্য চলছে তোড়জোড়, গুঞ্জন এবং অবস্থান জানান দেওয়ার প্রতিযোগিতা। আগামী নির্বাচনে কারা কারা বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাবেন, তা এখনো স্পষ্ট না হলেও শুরু হয়ে গেছে অবস্থান শক্ত করার রাজনৈতিক কৌশল ও মাঠ দখলের লড়াই।
নারায়ণগঞ্জ-৫
সদর ও বন্দর থানা এলাকা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। ফলে আসনটিতে বিএনপির বেশ কয়েকজন প্রবীণ ও তরুণ নেতা তাদের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে উপস্থাপন করছেন। পুনরায় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন এর আগে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া এবং মনোনয়ন পাওয়া নেতারাও।
এ আসনে তিনবারের সংসদ সদস্য আবুল কালাম এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছিল। তবে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মনোনয়ন চেয়েছিলেন কালাম। ওই সময় মহানগর বিএনপির সভাপতি ছিলেন তিনি। কিন্তু সেবার জোটের প্রার্থীকে আসনটি ছেড়ে দিয়েছিল বিএনপি।
দলীয় একটি সূত্র জানায়, শারীরিক নানা জটিলতার কারণে বেশ কিছুদিন মাঠের রাজনীতিতে সরাসরি সক্রিয় না থাকলেও আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচারণা শুরু করেছেন আবুল কালাম। তার ছেলে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশাও বাবার পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপির রাজনীতিতে পারিবারিকভাবে বেশ প্রভাব রয়েছে কালাম পরিবারের।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খানও। বিএনপির এ নেতা সারাদেশে আলোচনায় আসেন সাতখুন হত্যা মামলার সময়। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাদীপক্ষের আইনজীবী হয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দলেরও নজর কাড়েন। ২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী হয়েছিলেন সাখাওয়াত। যদিও ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর কাছে পরাজিত হন তিনি।
এবার মনোনয়ন দৌঁড়ে আছেন শিল্পদ্যোক্তা মাসুদুজ্জামান মাসুদ। এক সময় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা এ ব্যবসায়ী সদর-বন্দর আসনে প্রার্থী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন। রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা মডেল ডি ক্যাপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ মনোনয়ন চান বিএনপির। দলটির হাই-কমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগও ইতোমধ্যে পোক্ত করেছেন এবং দলের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়েই নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তিনি আলোচনায় থাকছেন বলে দাবি তার সমর্থকদের।
মাসুদ সমর্থকরা বলছেন, সমাজসেবায় জন্য সুপরিচিত মাসুদুজ্জামান তার সেবা দিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেছেন। তিনি একাধারে একজন ক্রীড়া সংগঠক, শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক। সংকটকালীন সময়ে যাকে পাশে পেয়েছে নারায়ণগঞ্জবাসী। করোনা দুর্যোগ থেকে শুরু করে শহরের প্রতিটি সংকটে নিরবচ্ছিন্নভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। সমাজে তার বিতর্কহীন ভূমিকা ও অবদানের জন্য দলসহ সর্বস্তরের মানুষের মাঝে রয়েছে বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা। দলেও তার অবস্থান ‘ক্লিন ইমেজধারী’ হিসেবে।
মনোনয়ন দৌড়ে আছেন মহানগর বিএনপির বর্তমান সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ী আবু জাফর আহমেদ বাবুল এবং করোনা যোদ্ধা খ্যাত দেশব্যাপী আলোচিত মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ।
নারায়ণগঞ্জ-৪
শ্রমিক অধ্যুষিত ঘনবসতিপূর্ণ এ আসনটিতে ভোটার সংখ্যাও সবচেয়ে বেশি। ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা নিয়ে গঠিত এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হাই প্রোফাইল নেতার সংখ্যাও অনেক। তবে তাদের মধ্যে আলোচনায় আছেন সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী শাহ্ আলম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব। মনোনয়ন পাবার প্রতিযোগিতায় এ চার বিএনপি নেতাই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন হাই-কমান্ডের সঙ্গেও।
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন স্থানীয় রাজনীতিতে বেশ প্রভাবশালী নেতা। এক সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা এ নেতা ২০০১ সালে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিএনপির জেলা কমিটির সভাপতিও ছিলেন।
দলটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৮ সালেও মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। সেবার জোটের প্রার্থীকে আসনটি ছেড়ে দেয় বিএনপি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর কয়েকমাস মাঠপর্যায়ের রাজনীতিতে দেখা যায়নি গিয়াসউদ্দিনকে। পরে ২০২২ সালে তাকে আহ্বায়ক করে জেলা বিএনপির কমিটি দেয় দল। পরের বছর সম্মেলনের মধ্য দিয়ে কমিটির সভাপতি হন তিনি। দলীয় রাজনীতিতে তখন আবার সক্রিয় হতে দেখা যায় গিয়াসকে। যদিও গিয়াসউদ্দিনকে নারায়ণগঞ্জ-৪ এর চেয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনেও বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেখা গেছে। ওই আসনেও মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে স্থানীয়ভাবে গুঞ্জন রয়েছে।
তবে, গিয়াস ছাড়াও ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনে এবার মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ‘ক্লিন ইমেজধারী’ হিসেবে আলোচনায় আছেন অধ্যাপক মামুন মাহমুদও। জেলায় দলটির নেতৃত্বও দিচ্ছেন তিনি। গতবার মনোনয়ন-বঞ্চিত এ নেতার বিগত সময়ে রাজনীতির মাঠে ত্যাগ ও নেতৃত্বের বিষয়টিকে দল আমলে নিবে বলে মনে করেন তার সমর্থকরা।
দীর্ঘ সময় ধরে রাজনীতির মাঠে সরাসরি না থাকলেও প্রতিবারই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ আসনটিতে আলোচনায় আসে ব্যবসায়ী শাহ আলমের নাম। কয়েক বছর আগে দল থেকে পদত্যাগ করা এ নেতা এখন সক্রিয় রাজনীতিতে না থাকলেও দলটির নেতা-কর্মীদের বড় একটি অংশকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে নিজের পক্ষে রেখেছেন শাহ আলম। তার ঘনিষ্ঠ অনুসারী বেশ কয়েকজন নেতা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ পদেও রয়েছেন।
এছাড়া এ আসনটিতে মনোনয়ন প্রত্যাশিত নেতাদের মধ্যে আছেন জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব। ছিলেন জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও তোলারাম কলেজের ভিপি। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল নেতা হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন তিনি। আছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিশেষ নেকনজরে। অনেকেই মনে করছেন গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী তারুণ্য নির্ভর রাজনীতির চাহিদায় ভাগ্য খুলে যেতে পারে মাসুকুল ইসলাম রাজীবের।
নারায়ণগঞ্জ-৩
ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সোনারগাঁ উপজেলা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনেও বিএনপির একাধিক নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী। তাদের মধ্যে সাবেক এক প্রতিমন্ত্রীও রয়েছেন।
গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হয়েছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান। ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠা ওই নির্বাচনে পরাজিত হন তিনি। এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির এ নেতা। স্থানীয়ভাবে নেতা-কর্মীদের উপর বেশ প্রভাবও রয়েছে তার। যোগাযোগও রাখছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে। তার ছেলে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সজীব বাবার পক্ষে কাজ করছেন।
তবে, মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম ও যুব উন্নয়নের সাবেক মহাপরিচালক এসএম ওলিউর রহমান আপেলও। দলীয় সূত্র বলছে, দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ থাকলেও দীর্ঘদিন রাজনীতির মাঠে নিষ্ক্রিয় থাকায় স্থানীয় পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে তাদের গ্রহণযোগ্যতা ও সমর্থন তুলনামূলক কম।
তবে মনোনয়ন দৌড়ে মান্নানের চিন্তা গিয়াসউদ্দিনকে নিয়ে। কেননা, সাম্প্রতিক সময়ে সোনারগাঁ উপজেলায় বিভিন্ন কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকতে দেখা যাচ্ছে গিয়াসকে। তার কর্মী-সমর্থকরা একাধিক সভায় গিয়াসকে এ আসনে প্রার্থী হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বক্তব্যও দিয়েছেন। তবে এ নিয়ে গিয়াসউদ্দিন এখনও পরিষ্কার করে কিছু বলেননি।
নারায়ণগঞ্জ-২
এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খাঁন আঙ্গুর, তার ভাতিজা বিএনপির সহঅর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন ও কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তার।
স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আন্দোলন-সংগ্রামে নজরুল ইসলাম আজাদের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। তার অনুসারী নেতা-কর্মীরা দলীয় কর্মসূচিগুলোতে সরব উপস্থিতি জানান দিয়েছে। যা তার সাংগঠনিক ভিতকে শক্ত করেছে। আড়াইহাজার উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসনটিতে মনোনয়ন প্রত্যাশিত হলেও আজাদের অনুসারী নেতা-কর্মীরা জেলা ও মহানগর বিএনপির কমিটিতেও রয়েছেন।
যদিও ২০১৮ সালের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে অংশ নিয়ে জামানাত হারিয়েছিলেন এ বিএনপি নেতা।
তবে, বিগত সময়গুলোর মনোনয়নের প্রতিযোগিতায় তার মুখোমুখি হতে হবে আতাউর রহমান আঙ্গুর ও মাহমুদুর রহমান সুমনের। এ আসনের একাধিকবারের সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খাঁন আঙ্গুরের দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রা রয়েছে। দলের হাই-কমান্ডের সঙ্গেও রয়েছে যোগাযোগ তার। অন্যদিকে তরুণ রাজনীতিক হিসেব কেন্দ্রে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে মাহমুদুর রহমান সুমনের। প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী পারভীন আক্তারও।
নারায়ণগঞ্জ-১
রাজধানীর পাশে পূর্বাচল উপশহরের কারণে বেশ আলোচিত রূপগঞ্জ উপজেলা। ফলে এ উপজেলা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-১ আসনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আসনটিতে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় আছেন দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন।
তাদের মধ্যে ২০১৮ সালে মনির ও দিপু দু’জনই দলটির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তবে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ পেয়েও হেরেছিলেন কাজী মনির। এবারও তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশা করলেও স্থানীয়ভাবে বেশ প্রভাবশালী অবস্থানে আছেন দিপু ভূঁইয়া। তরুণ রাজনীতিক হিসেবে কেন্দ্রেও বেশ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তার। অন্যদিকে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরও যোগাযোগ বজায় রাখছেন কেন্দ্রের সঙ্গে।
এ দুই মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতার মধ্যে ইতোমধ্যে দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে রয়েছে। এ দ্বন্দ্ব ছড়িয়েছে তাদের অনুসারী নেতা-কর্মীদের মধ্যেও। স্থানীয়ভাবে আধিপত্য ধরে রাখতে উভয়পক্ষের নেতা-কর্মীরা গত কয়েকমাসে একাধিকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
অন্যদিকে অপর তরুণ রাজনীতিক গোলাম ফারুক খোকনের নামটিও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচিত হচ্ছে। যদিও খোকন এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোথাও কথা বলেননি। কিন্তু তার সমর্থকরা আসন্ন সংসদ নির্বাচনে তাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতেও উত্তাপ বাড়ছে। একদিকে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব দল পুনর্গঠনের মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে, অন্যদিকে মাঠপর্যায়ে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে যুক্ত হচ্ছেন একাধিক নতুন ও পুরনো মুখ। প্রবীণ নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা এবং তরুণদের উদ্যম—এই দুইয়ের সমন্বয়ে দলটি আগামী নির্বাচনে নিজেদের সর্বোচ্চ প্রস্তুত রেখেই মাঠে নামবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে মনোনয়ন ঘিরে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিরসন এবং কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখাই হতে পারে বিএনপির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।