সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থীর গ্রেপ্তার দাবি বিএনপি নেতা সাখাওয়াতের
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সম্ভাব্য এক প্রার্থীকে ‘স্বৈরাচারের দোসর’ উল্লেখ করে তার গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।
তিনি বলেন, “আমি নাম নিতে চাই না। বন্দরের একজন লোক, যিনি প্রার্থী হয়েছেন। তিনি স্বৈরাচারের দোসর। ওনার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে বৈষম্যের কয়েকটা মামলাও হয়, তার কীভাবে জামিন হইলো সেটা আমরা জানি না। সে এজাহারনামীয় আসামি, জেলে ছিল।”
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় সাখাওয়াত আরও বলেন, “বর্তমানেও তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ থানা ও যাত্রাবাড়ি থানাসহ বিভিন্ন থানায় সুনির্দিষ্ট মামলা রয়েছে। অথচ সে গ্রেপ্তার হয় না, সে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোনো এজাহারনামীয় আসামিকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় নাই বা এমন কোন এমবার্গো (নিষেধাজ্ঞা) দেওয়া হয় নাই। তাদেরকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, এই নারায়ণগঞ্জের মানুষ সেটা জানতে চায়।
তিনি আরও বলেন, “স্বৈরাচারের দোসররা আজকে বিভিন্ন নামে-বেনামে নির্বাচন করার পায়তারা করছে। সেই পায়তারার ক্ষেত্রে প্রশাসন কী করছে, প্রশাসনের ভূমিকাটা কী, সেটা কিন্তু জনগণের কাছে কিছুটা হলেও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।”
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “অনেক গডফাদার যারা নারায়ণগঞ্জকে পূর্বে শাসন করেছে। তারা এখনো নারায়ণগঞ্জে ঘুরে বেড়ায়, নারায়ণগঞ্জে ব্যবসা-বাণিজ্য করে, তাদেরকে কেন গ্রেপ্তার করা হয় না? সেইটা কিন্তু এখন জনগণকে ভাবিয়ে তুলেছে এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলকেও কিন্তু ভাবিয়ে তুলেছে।”
প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ‘নিরাপত্তাজনিত শঙ্কা’ প্রকাশ করে এ বিএনপি নেতা বলেন, “গত পরশুদিন ঢাকাতে যে দুর্ঘটনা; নারায়ণগঞ্জেও ওই গডফাদাররা, ওই দোসররা এ ধরনের কাজ যে করবে না, সেটা কিন্তু আমরা বলতে পারি না।”
নারায়ণগঞ্জবাসীর নিরাপত্তার ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের সজাগ দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জে লুণ্ঠিত এবং অবৈধ সকল অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়ে সাখাওয়াত বলেন, “নারায়ণগঞ্জ থেকে সকল অস্ত্র উদ্ধার করা হোক। আমরা চাই না কোনো কর্মীর কাছে, কোনো দলের নেতার কাছে, কারো কাছে কোনো অস্ত্র থাকুক। আমরা চাই, প্রত্যেকে সমানভাবে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।”
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. রায়হান কবিরের সভাপতিত্বে এ সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আহসান শহীদ সরকার, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ, বর্তমান আমীর আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল ইসলাম সুজন, জাতীয় নাগরিক পার্টির জেলার প্রধান সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ আল আমিন, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি দ্বীন ইসলাম, মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, খেলাফত মজলিসের নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রার্থী ইলিয়াস আহমদ, গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি মো. নাহিদ, মহানগরের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আরিফ ভূঁইয়া, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিরব রায়হানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক জাতীয় পার্টির নেতা (বহিষ্কৃত) মাকসুদ হোসেন। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার মামলায় গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। পরে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হন।
তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে বিভিন্ন স্থানে পোস্টার-ফেস্টুনও সাঁটিয়েছেন।





































