ছাত্র-জনতার মুখোমুখি অনুষ্ঠানে মাসুদুজ্জামান
“সন্ত্রাস-মাদক-অপরাধের সাথে যুক্ত কেউ দলের হলেও জিরো টলারেন্স”
তারুণ্যের সম্ভাবনা এবং প্রবীণদের জ্ঞান বিচক্ষণতার সমন্বয়ে নিরাপদ আধুনিক কর্মসংস্থানমুখী ও শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে আগামীর নতুন নারায়ণগঞ্জ তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন নারায়ণগঞ্জ -৫ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ। তিনি বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জকে মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদামুক্ত শান্তিময় নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। যদি কেউ সন্ত্রাস মাদক অপরাধ জগতের সাথে যুক্ত থাকে তাহলে আমাদের জিরো টলারেন্স থাকবে। আমার দলের হলেও জিরো টলারেন্স থাকবে সবসময়।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর ) বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর মিলনায়তনে ‘শান্তি, উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও শিক্ষার কেন্দ্র হবে এই নারায়ণগঞ্জ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ছাত্র-জনতার মুখোমুখি অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের চোখে বন্দর ও নগর একই মায়ের সন্তান। আমাদের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। আমরা চাই বন্দর ও নগর নিয়ে একটি আধুনিক পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য নারায়ণগঞ্জ গড়তে। যেখানে থাকবে সুপরিকল্পিত সড়ক ব্যবস্থা, ড্রেনেজ, পার্ক, খেলার মাঠ ও আধুনিক গণপরিবহন।
কদমরসুল সেতু নিয়ে তিনি বলেন, বন্দর ও শহরের যোগাযোগ উন্নয়নে কদমরসুল সেতু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই সেতু নির্মাণের বিষয়টিকে জাতীয় অগ্রধিকারের দাবি করছি। আমরা আশা করি অচিরেই কদম রসূলের সেতুর মূল কাজ শুরু হবে। আমরা এই মঞ্চ থেকে তার জোর দাবি জানাই।
মাসুদুজ্জামান বলেন, নারায়ণগঞ্জ একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ও বাণিজ্যিক জেলা হওয়া হওয়া সত্ত্বেও আজও এখানে কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকারি মেডিকেল কলেজ নেই। এটা নারায়ণগঞ্জবাসীর সাথে অবিচার। আমরা চাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে, যাতে আমাদের সন্তানরা নিজ জেলার মধ্যেই উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পায়।
যানজট সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, শহরের দীর্ঘস্থায়ী যানজট নিরসনে নারায়ণগঞ্জকে আধুনিকায়ন করার পরিকল্পনা করছি। নারায়ণগঞ্জ একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পনগরী। তাই আমরা চাই, শিল্পবাহী আমদানি রপ্তানিমুখী যানবহনের জন্য একটা পৃথক রোড নির্মাণ করা হোক।
নারীদের নিরাপত্তা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান আমাদের অগ্রধিকার। নারী নিরাপত্তা হেল্প লাইন ও সেফ জোন চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
বেকারত্ব সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, এটি সমাধানে আমাদের বন্দর ও নগরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব ও প্রশিক্ষণ ভিত্তিক কর্মসংস্থান কর্মসূচি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে তরুণরা নিজ এলাকা থেকেই সম্মানের সঙ্গে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে।
নারায়ণগঞ্জবাসীর মেট্রোরেলের দাবির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেট্রোরেল এমআরটি-২ প্রকল্প থেকে নারায়ণগঞ্জকে বাদ দেওয়া একটি অবিচার। আমরা জোর দাবি জানাই, এটি পুনর্বিবেচনা করে নারায়ণগঞ্জকে মেট্রোরেল সংযোগে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যাতে আমাদের শহরও রাজধানীর সঙ্গে আধুনিক ও দ্রুতগতির যোগাযোগ ব্যবস্থার আওতায় আসে। সেইসাথে নারায়ণগঞ্জের ডাবল রেললাইন বাস্তবায়নের পক্ষে জোরালো দাবি জানাই।
মাসুদুজ্জামান বলেন, বিগত দিনে দেখেছি নেতার পিছনে গুন্ডা থাকে এবং ওই সমস্ত মুখগুলি চিহ্নিত অপরাধী এবং শহরটাকে দাবিয়ে বেরিয়েছে। আমরা ভবিষ্যতে আপনাদেরকে বলব যে, আমি যদি যোগ্য হই আপনি আমাকে নির্বাচিত করেন। আমি যোগ্য না হলে আপনি আপনার ভোট দিয়ে যোগ্য লোককে নির্বাচিত করুন। কিন্তু আমরা যেটা চাই, সেটা হচ্ছে সাধারণ ছাত্র যুবক জনতা তারা পিছনে থাকবেন জোর দিয়ে চালাবেন আপনারাই। কিন্তু পিছনে কোন এই সন্ত্রাস থাকবে না।
কিশোর গ্যাং সমস্যা মোকাবেলায় তরুণদের জন্য ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র বিকল্প কার্যক্রম চালু করারও কথা বলেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলে ডিজিটাল নাগরিক সেবা সিসিটিভি নির্ভর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর জোড় দেন তিনি।
শীতলক্ষ্যার জন্য সর্বোচ্চ আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেন মাসুদুজ্জামান। তিনি বলেন, আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, আমাদের ফেরার পথ নাই। যেভাবে হোক সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই শীতলক্ষ্যা ফিরিয়ে দিতে হবে সরকারকে সেটা যত টাকাই খরচ হোক না কেন।
জুলাইযোদ্ধা ও শিক্ষক নাজমুল হাসান রুমির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ও সদর-বন্দরের বিভিন্ন অঞ্চলের ভোটাররা।





































