পুলিশের সঙ্গে ছবি তুলে অপপ্রচার ঠেকাতে ফতুল্লা থানায় সতর্কবার্তা
ফতুল্লা মডেল থানায় বিতর্কিত বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে অনিচ্ছাকৃত ছবি তোলা রোধ করার জন্য নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। থানার অফিস কক্ষে প্রবেশদ্বারে একটি বিজ্ঞপ্তি টানানো হয়েছে, যেখানে লেখা রয়েছে: “ছবি তোলার জন্য অনুরোধ করবেন না। অনুরোধক্রমে অফিসার ইনচার্জ, ফতুল্লা মডেল থানা।”
এই পদক্ষেপের বিষয়টি নজরে আসার পর থানায় সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ ও স্থানীয়দের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একাংশ মনে করছেন এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ, কারণ বিতর্কিত ব্যক্তিরা পুলিশের সঙ্গে ছবি তুলে তা সামাজিক মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারে এবং নিজেদের প্রভাব প্রদর্শন বা অন্যকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। তবে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, এটি কি সাধারণ জনগণের জন্য কোনো অসুবিধা তৈরি করবে কি না।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মান্নান বলেন, “থানায় বিভিন্ন সময়ে এমন ব্যক্তিরা আসেন যারা রাজনৈতিক বা সামাজিকভাবে বিতর্কিত এবং অনেক সময় অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িত। তারা অনেক সময় কৌশলে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তুলে সেটি নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করার বা অন্যদের ভয় দেখানোর জন্য ব্যবহার করে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা সেই অপব্যবহার রোধ করতে চাই।”
ওসি আরও বলেন, “অনেকেই অনুমতি ছাড়া ছবি তুলতে চান। ছবি তোলার পর তা এমনভাবে ব্যবহার করা হয়, যা আমাদের ব্যাখ্যার বাইরে চলে যায়। এতে প্রশাসনিক বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। অনিচ্ছাকৃতভাবে বিতর্কিত ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তোলা বন্ধ করতেই এই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, “সাধারণ সেবা প্রার্থীদের জন্য থানার দরজা সবসময় খোলা থাকবে। তাদের কোনো অসুবিধা হবে না। শুধুমাত্র বিতর্কিত বা সন্দেহজনক ব্যক্তির ছবি তোলার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে যেন পুলিশ সদস্যদের সদাচরণকে কেউ অপব্যবহার করতে না পারে। এটি পুলিশের ভাবমূর্তি রক্ষা এবং প্রশাসনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
স্থানীয়রা এই উদ্যোগকে প্রশংসনীয় বলে মনে করছেন। একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বিতর্কিত বা অপরাধে জড়িতরা কখনো কখনো সরকারি কর্মকর্তা বা জনপ্রতিনিধির সঙ্গে ছবি তুলে নিজেদের প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত করার চেষ্টা করে। এটি রোধ করা গেলে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা সহজ হবে।”
ওসি মো. আব্দুল মান্নান এই নির্দেশনার উদ্দেশ্য পরিষ্কার করেছেন, “আমাদের দায়িত্ব সাধারণ মানুষের সেবা দেওয়া। তবে কেউ যেন পুলিশের পরিচয়কে অপরাধমূলক বা অনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে না পারে, তা নিশ্চিত করাও জরুরি। এজন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এটি সেবা প্রার্থীদের বিরক্ত করার জন্য নয়, বরং প্রশাসনের ভাবমূর্তি রক্ষা এবং অপরাধীদের অপব্যবহার ঠেকানোর জন্য।”





































