মাথাবিহীন লাশের রহস্য উদঘাটন করলো পিবিআই

পরকীয়াজনিত বিরোধের জেরে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মস্তকবিহীন যুবক হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। চার দিনের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা কামাল রাশেদ (বিপিএম) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

পিবিআই জানায়, শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকার মধ্যবাড্ডা এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত মো. রুহুল আমিন ওরফে রাব্বিকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার বাসিন্দা।

নিহত যুবকের নাম আব্রাহাম খান ওরফে আলিম খান (২৭), পেশায় রংমিস্ত্রি। তিনিও একই উপজেলার বাসিন্দা ছিলেন।

পিবিআইয়ের ক্রাইম সিন টিম তদন্তের মাধ্যমে নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করে।

জানা যায়, ১৫ ডিসেম্বর সকালে আলিম খান ঢাকার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বোনের সঙ্গে তার শেষ ফোনালাপ হয়। এরপর থেকেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

নিহতের বাবা ওয়াজেদ আলী খান আড়াইহাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার রুহুল আমিন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তদন্তে উঠে আসে, রুহুল আমিনের খালার সঙ্গে নিহত আলিম খানের পরকীয়াজনিত সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি পারিবারিকভাবে জানাজানি হলে আলিম ওই নারীকে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রুহুল আমিন ও তার খালা পরিকল্পিতভাবে আলিমকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর আলিম খানকে রাজবাড়ী থেকে আড়াইহাজারে ডেকে এনে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে পরিচয় গোপন করতে তার মাথা বিচ্ছিন্ন করে দা ও মস্তক একটি ব্যাগে ভরে পাশের খালে ফেলে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তার জামাকাপড়ও খুলে নেওয়া হয়।

পিবিআই জানায়, ১৮ ডিসেম্বর স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খাল থেকে নিহতের খণ্ডিত মস্তক, হত্যায় ব্যবহৃত দা এবং একটি জ্যাকেটের অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার রুহুল আমিনকে শনিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি তার খালা ও অন্যান্য অজ্ঞাত আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পিবিআই।