বামজোটের প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল
লালদিয়া চরে ডেনমার্কের কোম্পানিকে বন্দর নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্ব প্রদান, পানগাঁও নৌ-টার্মিনাল সুইজারল্যান্ডের প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তর এবং চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা দেওয়ার পরিকল্পনা বাতিলের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে এ সমাবেশ এবং পরে শহরে মিছিল বের করা হয়।
জোটের নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি শিবনাথ চক্রবর্ত্তী, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, সিপিবির জেলা সাধারণ সম্পাদক এম. এ. শাহীন, বাসদ জেলা ফোরামের সদস্য সেলিম মাহমুদ, এস. এম. কাদির, সিপিবি নেতা দুলাল সাহা ও ইকবাল হোসেন।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, জনমত উপেক্ষা করে ডেনমার্কের প্রতিষ্ঠান এপিএম টার্মিনালকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় লালদিয়া কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্ব দিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ৪৫ বছরের এই চুক্তিতে প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ৬০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে এবং বছরে আট লাখ কন্টেইনার ওঠা-নামা করাবে।
এছাড়া কেরানীগঞ্জের পানগাঁও নৌ-টার্মিনাল ২২ বছরের জন্য হস্তান্তর করা হচ্ছে সুইজারল্যান্ডের মেডিটেরানিয়ান শিপিং কোম্পানির সহযোগী প্রতিষ্ঠান মেডলগকে- যা ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিআইডব্লিউটিএ যৌথভাবে ১৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে।
নেতারা অভিযোগ করেন, মূল্যায়ন কমিটিকে পাশ কাটিয়ে এবং প্রয়োজনীয় বোর্ড সদস্যের উপস্থিতি ছাড়াই অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ৭ ও ৮ নভেম্বর সাপ্তাহিক ছুটির দিনে চুক্তির নেগোসিয়েশন ও চূড়ান্ত দলিল সম্পন্ন করা হয়েছে। আগামী ১৭ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে এসব চুক্তি চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বক্তারা দাবি করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ইজারা দেওয়ার এখতিয়ার নেই। তাদের উচিত সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করে ক্ষমতা নির্বাচিত সরকারের হাতে তুলে দেওয়া।
নেতারা আরও বলেন, বিগত সরকারের মেগা প্রকল্পের দায় জনগণকে বহন করতে হচ্ছে, আর বর্তমান সরকারও সেই ধারাবাহিকতায় দেশের স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে- যা দেশের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনবে।
চট্টগ্রামের শ্রমিক-কর্মচারীসহ সর্বস্তরের জনগণ ইতোমধ্যে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে। বামজোটও দেশব্যাপী রোডমার্চসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। তবুও সরকারের টনক নড়ছে না বলে বক্তারা মন্তব্য করেন।
সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাজপথে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেশপ্রেমিক জনগণের প্রতি আহ্বান জানান বামজোটের নেতৃবৃন্দ।





































