০৫ নভেম্বর ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ৫ নভেম্বর ২০২৫

নারায়ণগঞ্জে এনসিপির প্রার্থী তালিকায় আলোচনায় যারা 

নারায়ণগঞ্জে এনসিপির প্রার্থী তালিকায় আলোচনায় যারা 

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো জোটে না গিয়ে এককভাবেই সর্বাধিক আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে গণঅভ্যুত্থানের তরুণদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির আহ্বায়ক ও অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই সব আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হবে। বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইলে প্রয়াত জুলাই যোদ্ধা গাজী সালাউদ্দিনের বাড়িতে তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান নাহিদ ইসলাম। বিভিন্ন দল নারায়ণগঞ্জে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করলেও পিছিয়ে রয়েছে এনসিপি। 

নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি সংসদীয় আসনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৪ ও ৩ আসনে দলটির প্রার্থী প্রায় নিশ্চিত বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে এই দুই প্রার্থী নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা শুরু করেছেন। বিভিন্ন শ্রেনিপেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় সহ নাগরিক সমস্যা সমাধানে সোচ্চার রয়েছেন। বাকি তিনটি আসনে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন, আবার কোনো কোনো আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এখন পর্যন্ত এনসিপি কোনো রাজনৈতিক জোটে নেই, তবে নির্বাচন সামনে রেখে জোট গঠনের আলোচনা চলছে। সেক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে পারে দলটির বর্তমান নির্বাচনী সমীকরণে।

নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর ও বন্দর) আসনে আলোচনায় আছেন দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতা—দলের কেন্দ্রীয় দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত আলী ও সদস্য আহমেদুর রহমান তনু।

শওকত আলী একজন “জুলাই যোদ্ধা” হিসেবে পরিচিত। আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি নারায়ণগঞ্জে প্রথম সারিতে ছিলেন। পেশায় শিক্ষক শওকতের শহরের জামতলায় একটি কোচিং সেন্টার রয়েছে। তিনি ছাত্রজীবনে বাসদের ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনেও সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।

অন্যদিকে, আহমেদুর রহমান তনু নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক। তিনি রাজনৈতিক পরিবার থেকে উঠে এসেছেন—তার বাবা প্রয়াত আব্দুর রহমান ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তনু ছাত্রজীবনে নারায়ণগঞ্জ কলেজ ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে “ক্রান্তি খেলাঘর”, “উদীচি”সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনে যুক্ত হন এবং একসময় “ঐকিক থিয়েটার”-এ অভিনয় করেন। তিনি সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নারায়ণগঞ্জ মহানগর ও জেলার দায়িত্বও পালন করেছেন।

শওকত আলী বলেন, “নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনেই নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে। তবে দল এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। এ আসনে আরও মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, আমি তার পক্ষেই কাজ করব।”

আহমেদুর রহমান তনু বলেন, “পারিবারিকভাবে আমার রাজনৈতিক হাতেখড়ি। নারায়ণগঞ্জের নানা ইস্যুতে মাঠে ছিলাম, কাজ করেছি। চেম্বারের পরিচালক হওয়ার পরও মানুষের জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আশা আছে—তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলের।”

নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনে দলীয় প্রার্থী আগেই নিশ্চিত হয়েছেন। প্রার্থী হচ্ছেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ আল আমিন। তিনি ইতোমধ্যে এলাকার জলাবদ্ধতা, ডেঙ্গু মোকাবেলায় বিভিন্ন উদ্যোগ, নারায়ণগঞ্জকে মেট্রোরেলে যুক্ত করার আন্দোলনসহ নাগরিক সমস্যা সমাধানে কাজ করে ভোটারদের মধ্যে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। গুঞ্জন রয়েছে এনসিপি জোটগত ভাবে নির্বাচন করলে এই আসনে জোটের থেকেও মনোনয়ন পেতে পারেন জাতীয় নাগরিক পার্টির গুরুত্বপূর্ণ এই নেতা।  

তিনি বলেন, “আমাদের দল ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আমি নিশ্চিতভাবে নির্বাচন করছি। তবে বাকি আসনগুলোতে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। আগামী সপ্তাহেই সব আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।”

নারায়ণগঞ্জ-৩ (সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁও) আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন যুবশক্তি কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তুহিন মাহমুদ।

নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে এখনো কোনো সম্ভাব্য প্রার্থী আলোচনায় নেই। দলীয় পর্যায়েও কারো নাম প্রস্তাব করা হয়নি বলে জানা গেছে।

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন দুইজন—যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সিনিয়র সংগঠক ইয়াছিন আরাফাত ও ছাত্রনেতা সাইফুল ইসলাম রোমান।
 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়