শহীদদের রক্তকে কিনে নিতে চায় ক্ষমতাসীনরা: তরিকুল সুজন

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৪ আগস্ট) নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক এম এইচ কামরুজ্জামান।
আলোচনা সভায় গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন বলেন, ‘২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সাথে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের তুলনা করা রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে আমাদের অত্যন্ত ভুল সিদ্ধান্ত হবে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল সার্বভৌমত্বের লড়াই আর ২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হচ্ছে ফ্যাসিবাদের হাত থেকে রাষ্ট্র পুনরুদ্ধারের লড়াই। আজ দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের ভূমিকা নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে, কে কার চেয়ে বড়। এই দখলের প্রতিযোগিতায় আমরা দেখেছি, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকে বগলদাবা করে ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়েছে। আজ গণঅভ্যুত্থানকে বগলদাবা করার জন্য আরেকটি অংশ সক্রিয় আছে। এভাবেই জনগণের রাষ্ট্র বারবার বেদখল হয়ে যায়। শহীদদের রক্তকে কিনে নিতে চায় ক্ষমতাসীনরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। যে রাজনৈতিক বন্দোবস্তে রাষ্ট্র জনগণের হয়ে উঠবে। আর এই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য চাই অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক পুনর্গঠন। যে পুনর্গঠনের জন্য হাজারো ছাত্র জনতা জীবন দিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, সিটি কর্পোরেশনের মতো নাগরিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয় প্রভাবমুক্ত হয়ে সত্যিকার অর্থেই নাগরিকদের সেবা দিবে। তারা কোন দলের দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে না। বিগত সময়ে আমরা দেখেছি, স্বাধীনভাবে কোন প্রতিষ্ঠান কাজ করতে পারেনি। সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে এবং দলের প্রতি যারা আনুগত্য আছে, তাদের দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা হয়েছে। ফলে এই পুরো রাষ্ট্র ব্যবস্থা একটি দলের, এক ব্যক্তির রাষ্ট্র হয়ে উঠেছে। জনগণের রাষ্ট্র ক্ষমতাসীনদের জমিদারিতে পরিণত হয়েছে। হাজার হাজার ছাত্র জনতা জীবন দিয়েছে এই রাষ্ট্রকে পুনরুদ্ধারের জন্য। সুতরাং ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হচ্ছে রাষ্ট্র পুনরুদ্ধারের লড়াই। আমরা জীবনবাজি রেখে এই লড়াই করেছি, এই লড়াই জারি থাকবে।’
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহানগর কমিটির আহ্বায়ক সাখাওয়া হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ টিপু, ইসলামী আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগর সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, জাতীয় নাগরিক পার্টির সংগঠক শওকত আলী, গণঅধিকার পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার নাহিদ, সিপিবির নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান টিপু, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা প্রমুখ।