২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

আপডেট: ২১:৪০, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

সেনাবাহিনী চাইলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে: রফিউর রাব্বি

সেনাবাহিনী চাইলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে: রফিউর রাব্বি

“সেনাবাহিনী চাইলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে”- বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি।

তিনি বলেছেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী- বিশেষ করে সেনাবাহিনী বিষয়টাকে নিজেদের মনে করে বলে আমি মনে করি না। যদি সেনাবাহিনী মনে করে যে আমাদের নির্বাচন আমরা সুষ্ঠুভাবে করব। অবশ্যই এটি সুষ্ঠু হবে। যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নাও চায়, তারপরে এটি সুষ্ঠু হবে। যদি নির্বাচন কমিশন বলে যে, আমরা নির্বাচনটা সুষ্ঠু করব। এইটি তারা পারবে না। কারণ তাদের ভূমিকাটা এর মধ্যে আমরা দেখেছি। তাই প্রশ্ন উঠতে পারে যে তাহলে সেনাবাহিনী কি চাচ্ছে না নির্বাচনটা সুষ্ঠু হোক? আমি মনে করি আসলেই সেনাবাহিনী চাচ্ছে না। এতে যে যাই মনে করুক না কেন, যে যাই বলুক না কেন। যদি চায় তাহলে সুষ্ঠু হবে। সরকার যদি চায় এটি সুষ্ঠু করবে, তারপরেও এটি সুষ্ঠু হবে বলে আস্থা রাখতে পারছি না।”

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রাঙ্গণে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর জেলা কমিটির আয়োজিত শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমাদের যে কেন্দ্রগুলো রয়েছে, যেগুলোর দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের দিয়ে এই নির্বাচনটা সুষ্ঠু করা সম্ভব না। কিন্তু তারপরেও আমি মনে করি, নির্বাচনে যেটিই হোক না কেন, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এখনকার যে অস্থিরতা রয়েছে এটির অবসান ঘটবে।”

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে কেন্দ্র দখল হবে না, কিভাবে আমরা বলব? কারণ এটি আমাদের রক্তে-শিরায় মিশে আছে। নির্বাচনের দিন লক্ষ লক্ষ কেন্দ্র কে পাহারা দেবে? পুলিশ? যেই পুলিশ ২০০ মানুষ দেখলে দৌড় দেয়। যে অবস্থা তৈরি হয়েছে তাদের হাতে পায়ে ধরলেও তারা সেখানে যেতে চায় না। এমনকি সেনাবাহিনীও তাদের অবস্থানটা এমনি তৈরি করেছে।”

রফিউর রাব্বি বলেন, “এখানে আশাবাদের কথা খুব একটা নেই, কিন্তু আমি আশাবাদী মানুষ। এজন্য হতাশাবাদী নই। তাই আমি গোটা বিষয়টাকেই ইতিবাচকভাবেই দেখছি। যদিও পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে নির্বাচন কমিশন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেকোনভাবেই এই নির্বাচনটা করে ফেলতে চাচ্ছেন। অর্থাৎ ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। আজকে যে সংকটগুলো আমরা দেখছি চারদিকে, এই সংকট অনেকটাই কমে যাবে পুরোপুরি তা নয়। তবে অনেকটাই কমে যাবে যদি একটা নির্বাচন হয়। কিন্তু নির্বাচনটি সুষ্ঠু হবে তা আমি কোনভাবেই বিশ্বাস করি না।”

নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা নিয়ে তিনি বলেন, “নমিনেশন পেপার জমা দেয়ার শেষ সময় ২৯ তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল। সাত-আট দিন আগে যারা প্রার্থী হচ্ছেন, তারা বিলবোর্ড ও অন্যান্য প্রচারণার উপকরণ সরিয়ে দেবে, কিন্তু এগুলো এখন সড়কে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সাথে এই বিষয়গুলো সরাসরি নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে চলে আসে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন এই কাজগুলো যথাযথভাবে পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এই কারণে আজ যে সংশয় তৈরি হয়েছে, যে আদৌ নির্বাচন হবে কি না, এখানেই নিহিত রয়েছে যে আমাদের নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না।”

সংবাদপত্রের উপর হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, “যারা গত পাঁচ-ছয় দিন আগে এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা ডেইলি স্টার, প্রথম আলো বা ছায়ানটের মাধ্যমে পূর্ব ঘোষণা দিয়েছিল। তারপরও যখন ঘটনা ঘটেছে, বিভিন্ন উপদেষ্টা বাহিনীকে জানানো হয়েছে, কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। সুতরাং এ থেকেই বোঝা যায় যে আমাদের ফেব্রুয়ারির নির্বাচন কেমন হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা ৯১ সালের নির্বাচনের কথা বলি, সেই নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সেই সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।

সুজনের জেলা সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক কমিটির সভাপতি অ্যাড. আবু বক্কর সিদ্দিক, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাড. মাহবুবুর রহমান মাসুম, গণতান্ত্রিক আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আওলাদ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়, নগর ভাবনার আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস, নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল হক রুমন রেজা, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি।

সংগঠনটির জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল হকের সঞ্চলনায় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদ, বাসদের সেলিম মাহমুদ ও এনসিপির আহমেদুর রহমান তনু প্রমুখ।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়