মিছিলের পর শীতলক্ষ্যা সেতুর নাম বদলে “হাদি সেতু” লিখে দিলো ছাত্ররা
বিচারের দাবিতে মিছিলের পর নারায়ণগঞ্জের সদর-বন্দরকে সংযুক্ত করা তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর নাম বদলে সেখানে “শহীদ ওসমান হাদি সেতু” ব্যানার সাঁটিয়েছে ছাত্ররা।
তারা বলছেন, গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম মুখ শরিফ ওসমান হাদিকে সম্মান জানিয়ে সেতুর নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। যদিও সেতু তদারকের দায়িত্বে থাকা নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কিছু পূর্বে অবগত ছিলেন না বলে জানান।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে বন্দর উপজেলার শাহী মসজিদ এলাকা থেকে কয়েকশʼ ছাত্র ও স্থানীয় লোকজনের একটি মিছিল বের হয়।
রাজধানীর একটি সড়কে আততায়ীর গুলিতে নিহত শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে এ মিছিলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা নেতৃত্ব দেন। তবে, ছাত্র শিবির, আপ বাংলাদেশের নেতা-কর্মীরাও এতে অংশ নেন।
মিছিল শেষে তারা বন্দরের ফরাজিকান্দা এলাকায় তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর টোলপ্লাজার সামনে সেতুর নামফলকে “শহীদ ওসমান হাদি” লেখা ব্যানার সাঁটিয়ে দেন।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এনসিপি বন্দর উপজেলা যুগ্ম সমন্বয়ক সোয়াইব রহমান বলেন, “দেশের ১৮ কোটি মানুষের ভালোবাসার মানুষ, বিপ্লবী বীর শহীদ শরিফ ওসমান হাদিকে যে বা যারা হত্যা করেছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা উচিত। শহীদ হাদির কারণে দেশের মানুষ সত্য বলা শিখেছে। হাদি আমাদের দেশের অমূল্য সম্পদ ছিলেন। আজকের কর্মসূচিতে তার সম্মানে সেতুর নামকরণ করা হলো।”
এনসিপির নেতা রিদওয়ানুল ইসলাম শুভ বলেন, “শহীদ হাদির কথা স্মরণ করলে হৃদয় কেঁপে উঠে। প্রকাশ্যে দিবালোকে একজন এমপি প্রার্থীকে গুলি করে হত্যা করা হলো, অথচ আজও পর্যন্ত খুনি ধরা পড়েনি। প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি, খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা জরুরি।”
বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া মো. ফয়সাল, বন্দর থানা সাবেক ছাত্র শিবিরের আহ্বায়ক মো. আল হাসান, মো. সাগর, মো. নাদিম, আপ বাংলাদেশ মহানগর নেতা মো. সাদিউর রহমান, মো. আশরাফুল, মো. রাসেল প্রমুখ।
নাম পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহিম বলেন, “আমরা নাম পরিবর্তনের পর বিষয়টি জেনেছি। নাম পরিবর্তন করতে হলে নির্দিষ্ট কিছু প্রসিডিউর আছে। আমি মনে করি, সেই প্রসিডিউর অনুযায়ী নাম পরিবর্তনে যাওয়া উচিত। নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা এখন পর্যন্ত নেই।”
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হলেও সেটি শেষ করতে এক দশক লাগে। শুরুতে সেতুটির নাম তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু হিসেবে থাকলেও পরে ২০২২ সালে উদ্বোধনের সময় সেটির নাম “একেএম নাসিম ওসমান সেতু” নাম দেওয়া হয়। নাসিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টির চারবারের সংসদ সদস্য ছিলেন। যদিও গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগের পতন হলে নামটি আবার পরিবর্তন করে নাসিম ওসমানের পরিবর্তে পুনরায় তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু লিখে দেওয়া হয়।
তবে, সওজ সূত্র বলছে, দাপ্তরিকভাবে এটির নাম এখনো একেএম নাসিম ওসমান সেতুই। নাম পরিবর্তনের জন্য মন্ত্রণালয়ের আদেশের প্রয়োজন হয়। এটি এখন পর্যন্ত হয়নি।





































