শেখ রাসেল নগর পার্কের নতুন নাম ’নারায়ণগঞ্জ সিটি পার্ক’

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের অর্থায়নে নির্মিত শেখ রাসেল নগর পার্ক এর নাম পরিবর্তন করে 'নারায়ণগঞ্জ সিটি পার্ক' রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সচিব (উপসচিব) মো. নূর কুতুবুল আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস রিলিজের মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে নগরীর বিভিন্ন মহল ও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে পার্কের নাম পরিবর্তন করার দাবি ওঠে। এমনকি পার্কের বাবুরাইল প্রান্তে থাকা শেখ রাসেলের ম্যুরাল কালো রঙ দিয়ে আঁকা হয় এবং তা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয়। একইভাবে, পার্কের ডিআইটি অংশে থাকা ম্যুরালেও কালো রঙ দেওয়া হয়।
প্রেস রিলিজে জানানো হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান এর পর, গত সরকারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিবর্গের নামে প্রশাসনিক আদেশে নির্মিত বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তন করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্দেশনা প্রদান করে।
এই নির্দেশনা অনুযায়ী, ১৭ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের স্থানীয় সরকার কর্তৃক গঠিত কমিটির ৫ম সাধারণ সভায় শেখ রাসেল নগর পার্ক এর নাম পরিবর্তন করে 'নারায়ণগঞ্জ সিটি পার্ক' নামকরণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। নতুন নামকরণটি ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।
উল্লেখযোগ্য যে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী এর উদ্যোগে সিটি কর্পোরেশনের অর্থায়নে নগরীর দেওভোগ এলাকায় ১৮ একর জায়গায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল এর নামে এই পার্ক নির্মাণ করা হয়। এর নির্মাণ ব্যয় ছিল প্রায় ৫৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
এই পার্ক নির্মাণের আগে, এটি ছিল একটি পরিত্যক্ত ডোবা, যা ডাম্পিং এর রূপ ধারণ করেছিল এবং মশা-মাছির প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত ছিল। সেই সময় এটি নগরীর জন্য একটি অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল, এবং লেক এলাকার পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনাগুলো মাদক ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল।
২০১০ সালে, রাজউক এটিকে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা) হিসেবে চিহ্নিত করে এবং ২০১১ সালে তৎকালীন মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী জায়গাটি খনন, সংস্কার এবং সৌন্দর্য বর্ধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায়, ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে পার্কটি উদ্বোধন করা হয়।
নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার আগে থেকেই এই পার্কটি নারায়ণগঞ্জ শহরের মানুষের জন্য স্বস্তি এবং অবসর সময় কাটানোর একটি স্থান হয়ে উঠেছে, যা এখন নগরবাসীর একটি জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।