মারধরের অভিযোগে মামলা না নেওয়ায় পরিবারসহ থানায় অবস্থান
নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে মামলার বাদী ইরফান মিয়া (৫০) এবং তার পরিবারের চার সদস্যের ওপর গত রোববার হামলার ৪৮ ঘণ্টা পার হলেও মামলা হয়নি। পরিবারটির অভিযোগ, হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত তালিকায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খানের নাম থাকায় পুলিশ মামলা নিচ্ছে না।
হামলার শিকাররা হলেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ইসদাইর এলাকার ব্যবসায়ী ও মামলার বাদী ইরফান মিয়া, তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা, ছেলে মো. জিদান (১৮) এবং ৫ বছর বয়সী শিশু মো. আবদুল্লাহ। হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা গেছে, শিশু আবদুল্লাহর সামনেই তার বাবা-মা ও ভাইকে মারধর করা হচ্ছে। রাজিয়া সুলতানা দাবি করেছেন, হামলার সময় শিশুটিকেও মারধর করা হয়েছে এবং সে মেরুদণ্ডে আঘাত পেয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, হামলার ঘটনায় সরাসরি অংশ নিয়েছেন সাখাওয়াত হোসেনের ল ফার্মের জুনিয়র আইনজীবী খোরশেদ আলম, আল-আমিন এবং সহকারী (মুহুরি) হিরণ বাদশা। তবে সাখাওয়াত হোসেন খান নিজেকে সম্পৃক্ততা থেকে মুক্ত রেখেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই এবং বিরোধী পক্ষ এসব কাণ্ড ঘটাচ্ছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, হামলার পরও থানায় মামলা করতে না পেরে বাদী পরিবার গত সোমবার রাত ফতুল্লা মডেল থানার সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন। রাজিয়া সুলতানা বলেন, “আমরা ন্যায়বিচারের জন্য আদালতে গিয়েছিলাম, সেখানে আমাদের ৫ বছরের শিশুসন্তানের সামনে এভাবে মারধর করা হবে—কল্পনাও করিনি।” ইরফান মিয়া বলেন, “পুলিশ জানিয়েছে, সাখাওয়াত হোসেনের নাম বাদ না দিলে তারা মামলা নেবে না। আমরা আমাদের অভিযোগ থেকে কাউকে বাদ দেব না।”
ফতুল্লা থানা সূত্রে জানা গেছে, হামলার ঘটনায় বাদী রাজিয়া সুলতানা দুটি পৃথক অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে নয়জনের নাম উল্লেখসহ আরও পাঁচজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে সাখাওয়াত হোসেন, খোরশেদ আলম, আল-আমিন, বিল্লাল হোসেন এবং সহকারী হিরণ বাদশা রয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, ইরফান মিয়ার ব্যবসায়িক টাকা আদায় সংক্রান্ত মামলা নিয়ে তর্কের পর হামলা চালানো হয়।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান জানান, “পাল্টাপাল্টি একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ভিডিও দেখেছি। প্রাথমিক তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাখাওয়াত হোসেনকে মামলা থেকে বাদ দিতে চাপ দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।”





































