‘লগি বৈঠার তাণ্ডব মানবজাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়’
ঐতিহাসিক ২৮ অক্টোবর ২০০৬ সালের লগি বৈঠার তাণ্ডবে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় নারায়ণগঞ্জ মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) শহরের হোসিয়ারী সমিতি ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের জামায়াত এমপি প্রার্থী মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদ বলেন, “সেদিন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোটের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে ভারতের একটি তাবেদার রাজ্যে পরিণত করা। সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ জামায়াতে ইসলামী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওপর চূড়ান্ত আঘাত হানে।”
তিনি অভিযোগ করেন, ২৮ অক্টোবরকে নির্বাচিত করে সারাদেশে লগি বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে শহীদ মুজাহিদ, মাসুম, জসিম, হাবিবুরসহ অসংখ্য নেতাকর্মী এবং সাধারণ নাগরিককে হত্যা করা হয়। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়।
মাওলানা মইনুদ্দিন এই ঘটনা রাজনীতির নামে ‘জ্বালাও-পোড়াও নীতি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, “তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতার মসনদ দখল করা।”
তিনি আরও বলেন, ভারতের প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদ বলেন, “সেদিন জামায়াতের কর্মীরা জীবন বাজি রেখে নেতৃবৃন্দকে রক্ষা করায় একটি বড়ো ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়। এ দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব থাকায় এদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করা যায়নি।”
তিনি জুডিশিয়াল কিলিং-এর মাধ্যমে অনেক জামায়াত নেতাকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, শহীদ নেতৃবৃন্দের আত্মত্যাগের ফলাফল ‘জুলাই বিপ্লবের’ মাধ্যমে আল্লাহ ফেরত দিয়েছেন। তিনি জানান, আজকের গণজোয়ারে ২৮ অক্টোবরের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা লগি বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে সারাদেশে মানুষ হত্যার পৈশাচিক দৃশ্য সৃষ্টি করেছে। এটি মানবজাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়।”
মহানগরী জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে দেশে আবার হাসিনা ফিরে আসবে। তারা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। তাই আমাদের সম্মিলিতভাবে রুখে দিতে হবে।” তিনি উল্লেখ করেন, “অক্টোবর ভুলে গেলে চলবে না, এর চূড়ান্ত ফলাফল আমরা ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে দেখেছি।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম, সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন, সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ জামাল হোসাইন ও এইচ এম নাসির উদ্দিন, মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সভাপতি হাফেজ আব্দুল মোমিন, সিদ্ধিরগঞ্জ পশ্চিম থানার আমীর মাহাবুব আলম, বন্দর দক্ষিণ থানার আমীর মাওলানা ফজলুল হাই জাফরী, ইঞ্জিনিয়ারস ফোরাম সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হাই, মহানগরী কর্ম পরিষদ সদস্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, বিশিষ্ট শিক্ষাবীদ ওমর ফারুকসহ অন্যান্য জামায়াত নেতৃবৃন্দ।
সভা শেষে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।





































