সরকার পরিবর্তন হলেও রাষ্ট্রের ব্যবস্থাগত বৈষম্য রয়ে গেছে: ফিরোজ
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও মহান রুশ বিপ্লবের ১০৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় চাষাড়া শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার আগে লাল পতাকা, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে একটি শোভাযাত্রা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
জেলা আহ্বায়ক নিখিল দাসের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন জেলা বাসদের সদস্য সচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের জেলা সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সোনারগাঁ বাসদের সমন্বয়ক বেলায়েত হোসেন, ফতুল্লা থানা বাসদের আহ্বায়ক এম এ মিল্টন, সদস্য সচিব এস এম কাদির প্রমুখ।
বক্তব্যে বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, “১৯৮০ সালে বাসদ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই গণদাবিতে আমরা জনগণের পাশে আছি। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীরা নির্যাতিত হয়েছে। সরকার পরিবর্তন হলেও রাষ্ট্রের ব্যবস্থাগত বৈষম্য এখনো রয়ে গেছে। ফলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কর্মসংস্থান সংকট, কৃষকের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া, চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি- এসব সমস্যা আজও বিদ্যমান।”
তিনি অভিযোগ করেন, গত দেড় বছরে তৌহিদী জনতার নামে মাজার-মন্দির ভাঙচুর, বাউল শিল্পীদের ওপর হামলা, সাংস্কৃতিক উৎসব বন্ধসহ বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক অপকর্ম সংঘটিত হয়েছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়।
বাউল আবুল সরকারকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর মুক্তির দাবিতে আয়োজিত শান্তিপূর্ণ কার্যক্রমেও হামলার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিকল্প হিসেবে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদকে প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে।”
ফিরোজ বলেন, “একদিকে দুর্নীতি-দখল চলছে, অন্যদিকে দেশের সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। শেখ হাসিনার রায়ের দিনে গোপনে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা লালদিয়া কন্টেইনার টার্মিনাল ৪৫ বছরের জন্য ডেনমার্কের কোম্পানির কাছে এবং পানগাঁও নৌ-টার্মিনাল ২২ বছরের জন্য সুইস কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়া হয়েছে। এটি জাতির স্বার্থবিরোধী।”
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এ চুক্তি বাতিল এবং দ্রুত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানান।
সভায় বক্তারা আরও কয়েকটি স্থানীয় দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- শীতলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গা নদী দূষণমুক্ত করা এবং কদমরাসুল সেতুর পশ্চিম পাশের ডিজাইন সংশোধন করে দ্রুত কাজ শেষ করা। নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে চাষাড়া পর্যন্ত মাটির নিচ দিয়ে রেললাইন নির্মাণ ও রেলসেবা উন্নয়ন। যানজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং মূল শহর পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু। নারায়ণগঞ্জে খুন, মাদক, মব সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িক হামলা, নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ। গ্যাস-পানির সঙ্কট নিরসন এবং যৌক্তিক বাসাভাড়া নির্ধারণে আইন প্রণয়ন।
জনসভায় চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গণসংগীত পরিবেশন করে।





































