আত্মসমর্পনের পর জামিন পেলেন সাখাওয়াত
নারায়ণগঞ্জ জেলা জজ আদালত চত্বরে এক বিচারপ্রার্থী ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলার ঘটনায় মামলায় আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন পেয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাসুম ১০০ টাকা বন্ডে সাখাওয়াতসহ এই মামলার ছয় আসামিকে জামিন দেন বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান।
জামিন পাওয়া অপর আসামিরা হলেন: সাখাওয়াতের অনুসারী তিন আইনজীবী- খোরশেদ আলম, মো. আল আমিন ও বিল্লাল হোসেন, তার সহকারী (মুহুরি) হিরণ বাদশা ও রাসেল বেপারী।
আদালতে সাখাওয়াত হোসেন নিজে তাদের পক্ষে শুনানি করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির (বার) সাবেক এ সভাপতির সঙ্গে এজলাসে শুনানিতে অংশ নেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুল বারী ভূঁইয়া, আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধান, জেলা আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক নয়ন।
তবে, শুনানির জন্য বাদীপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী রাজিয়া সুলতানা। তার অভিযোগ, আদালতপাড়ায় অন্তত চারজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন তিনি। কিন্তু প্রভাবশালী বিএনপি নেতা ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খানের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াতে চাননি বলে দাবি তার।
এমনকি বাদী রাজিয়া সুলতানা আদালতের বারান্দায় উপস্থিত থাকলেও তাকে এজলাসে প্রবেশে সাখাওয়াত হোসেন খানের অনুসারী আইনজীবীরা বাধা দেন।
তবে, রাষ্ট্রপক্ষে আদালত পুলিশ শুনানিতে অংশ নিয়েছে এবং জামিনের বিরোধীতা করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ পরিদর্শক কাইউম খান। কিন্তু তিনি বলেন, “আমি নিজে এজলাসে উপস্থিত ছিলাম। আমার নজরে কাউকে এজলাসে প্রবেশে বাধা দেওয়ার মতো ঘটনা আসেনি।”
জামিন পেয়ে বার ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, “সব সময় আদালত প্রাঙ্গণকে পবিত্র রাখার চেষ্টা করেছি এবং অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে নিজেকে সোচ্চার রেখেছি। অথচ আজকে এই রকম একটা মিথ্যা ঘটনায় আমাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হলো। এই দুঃখ আমি কাউকে বুঝাতে পারবো না।”
২০১১ সালে সারাদেশে আলোড়ন তোলা সাত খুন হত্যা মামলায় বাদী পক্ষের হয়ে আদালতে লড়ে আলোচনায় আসেন সাখাওয়াত হোসেন। পরে ২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে মেয়র প্রার্থী হন এ বিএনপি নেতা। যদিও আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর কাছে পরাজিত হন তিনি।
গত রোববার আদালত প্রাঙ্গণে শহরের কালিরবাজারের স্যানেটারি ব্যবসায়ী মো. ইরফান মিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা হামলার শিকার হন। পরে ইরফানের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দেন, যেখানে হামলার নির্দেশদাতা হিসেবে সাখাওয়াত হোসেনকেও আসামি করা হয়। তিনদিন পর মঙ্গলবার রাতে মামলাটি নথিভুক্ত করে পুলিশ।





































