শহর-বন্দর ভাগ হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে নারায়ণগঞ্জ: তরিকুল ইসলাম
কদমরসুল সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বন্দর উন্নয়ন ফোরামের উদ্যোগে একরামপুরের সিএসডি গেট এলাকায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বন্দর উন্নয়ন ফোরামের সদস্য সচিব আব্দুল লতিফের সঞ্চালনায় মানববন্ধনের সভাপতিত্ব করেন হাফেজ মোহাম্মদ কবির হোসেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন।
তিনি বলেন, আমি কিছু বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন। কদমরসুল সেতুকে কেন্দ্র করে শহর বন্দর ভাগ হলে, ভাগ হয়ে যাবে নারায়ণগঞ্জের ভাগ্য। এই কদমরসুল সেতু নিয়ে আমরা কোনো রকম বিভাজন চাই না। ঐক্যবদ্ধ নারায়ণগঞ্জই আমাদের প্রধান শক্তি। আমরা যদি পূর্ব-পশ্চিম, এপার-ওপার বলে নিজেদের মধ্যে বিভাজন করি, তাহলে এই বিভাজনের কারণে নারায়ণগঞ্জই বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই বিভাজন ছাড়াই গত ৫৪ বছরে প্রশাসনিকভাবে নারায়ণগঞ্জ বঞ্চিত এবং অবহেলিত হয়েছে। বরং ঢাকার প্রয়োজনে নারায়ণগঞ্জকে সবসময় ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কদম রসুল সেতু নিয়ে কেউ বিরোধিতা করছে না। সকলেই চাচ্ছেন সেতুর দ্রুত বাস্তবায়ন। সেতুর ল্যান্ডিং মুখ পরিবর্তন নিয়ে যারা দাবি তুলেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই- বন্দরবাসী যদি সেতুর জন্য নিজেদের পৈতৃক ভিটা মাটি ছেড়ে দিতে পারেন তাহলে সেতুর ল্যান্ডিং মুখে যারা দোকানপাট করছে, সরকারি জায়গা দখল করে আছে, রাস্তা দখল করে ব্যবসা করছে, কেন তাদের অপসারণ করে রাস্তা বৃদ্ধি করা হবে না? কদম রসুল সেতুর সুবিধাভোগী দুই পারের লোকজন হলেও প্রধান সুবিধাভোগী হচ্ছে বন্দরবাসী। এই সেতুর মাধ্যমে কেবল বন্দরের যোগাযোগ ব্যবস্থারই আমূল পরিবর্তন হবে না; বদলে যাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ অর্থনৈতিক চালচিত্র। সুতরাং কদম রসুল সেতু হতে হবে বন্দরের মানুষের প্রয়োজন অনুসারে এবং সেতুর ল্যান্ডিং মুখ সেখানেই দিতে হবে যেখানে দিলে বন্দরবাসী উপকৃত হয়। যারা বলছেন, বর্তমান নকশায় সেতুর ল্যান্ডিং মুখ হলে শহরে যানযট বাড়বে। তারা নিশ্চয় জানেন, যানজট নিরোসনের দায়িত্ব প্রশাসনের। প্রশাসন যদি যানজট নিরসনে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা কিসের প্রশাসন? কেনো বিকেএমই, চেম্বার কিংবা মডেল গ্রুপের টাকায় যানজট নিরসন করতে হবে? যানজট নিরসনের কাজ প্রশাসনের। প্রশাসনের ব্যর্থতার দায় কেন বন্দরবাসী দিবে? কারো ওপরে দায় না চাপিয়ে, ব্যবসায়ী সহযোগিতা ছাড়া প্রশাসনকে যানজট নিরসন করতে পারতে হবে। শহর-বন্দরের বিভাজন আমাদের রক্তের উপর দিয়ে যাবে। আমরা কোনো বিভাজন চাই না। আমি কদমরসুল সেতুর দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জবাসীর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী নুরুদ্দিন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফা সাগর, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তা বেগম, বন্দর প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা জিএম মাসুদ, ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ আহমেদ রবি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার, এডভোকেট শরিফুল ইসলাম শিপলু, কাজী সাঈদ, আশিফুজ্জামান দুর্লভ, নারায়ণগঞ্জ সিটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল্লাহ মাহমুদ টিটু, বন্দর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ জাহিদ, সাংবাদিক সাব্বির আহমেদ সেন্টু, শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, কদম রসুল কলেজের সদস্য সোহেল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী ক্লাবের সহ-সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান জসিম প্রমুখ।





































