সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের ফেসবুক পোস্ট
এসএম রানা জমি দখল, চাঁদাবাজি, লুটপাট ও গুম-খুনে জড়িত ছিলেন
নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও ওসমান পরিবার ঘনিষ্ঠ এসএম রানাকে নিয়ে ফেসবুকে বিস্ফোরক পোস্ট করেছেন কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের।
নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, "কিছু ঘটনা সিনেমার স্ক্রিপ্টকেও হার মানায়। পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছিলো, এমন এক অপরাধীকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এর অফিসিয়াল বানিয়ে রেডিসন হোটেলে রুম বরাদ্দ, এমনকি চট্টগ্রাম-ঢাকা যাতায়াতের বিমানের টিকিট পর্যন্ত প্রদান করে বিসিবি।"
তিনি দাবি করেন, অনুসন্ধানে জানা গেছে বিসিবির বর্তমান সভাপতি ফারুক আহমেদের সাথে এসএম রানার বিশেষ সখ্যতা রয়েছে। দু'জনকে একসাথে কয়েকটি ম্যাচেও দেখা গেছে। নারায়ণগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ ও হামলার অভিযোগ রয়েছে রানার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া গুম-খুনসহ নানা অপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর ও ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা রয়েছে (মামলা নম্বর যথাক্রমে ১২/২৭-০৮-২৪ এবং ১৮/২২-০৮-২০২৪)।
জুলকারনাইন সায়ের আরো উল্লেখ করেন, ফারুক আহমেদের সরাসরি নির্দেশে এসএম রানাকে বিসিবি অফিসিয়াল পরিচয়ে ৩০ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত রেডিসন হোটেলে রাখা হয় এবং এ ব্যয় বহন করে বিসিবি। একইসঙ্গে রানার জন্য বিমানের টিকিটও দেওয়া হয়, অথচ তখন তিনি ছিলেন একজন পলাতক আসামি।
পরে ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুবাই পালানোর চেষ্টা করার সময় এসএম রানাকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আটক করার পর তাকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
ফেসবুক পোস্টে জুলকারনাইন সায়ের অভিযোগ করেন, শামীম ওসমান ও তার শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটুর ছত্রছায়ায় থেকে এসএম রানা জমি দখল, চাঁদাবাজি, লুটপাট ও গুম-খুনসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিলেন।
পোস্টের শেষাংশে জুলকারনাইন সায়ের বিসিবি সভাপতির উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন, "বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ — কেন এসএম রানার মতো একজন অপরাধীকে ক্রিকেট বোর্ডের অর্থে আতিথেয়তা প্রদান করলেন? আর কি উদ্দেশ্যে তাকে বিসিবি অফিসিয়াল হিসেবে উল্লেখ করা হলো?"
উল্লেখ্য এসএম রানার বিরুদ্ধে জমি দখল, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। ফতুল্লার পঞ্চবটি থেকে মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণের সময় ভূমি অধিগ্রহণের বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভূমি মালিকদের ভুল তথ্য দিয়ে তাদের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে জমির মালিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জমির দখল নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। স্থানীয়রা দাবি করেন, তিনি বিভিন্ন কৌশলে জমির মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করে পরে জোরপূর্বক তাদের জমি নিজের নামে লিখিয়ে নিতেন। এর আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ৪২ লাখ টাকা উদ্ধারকাণ্ডে তার নাম উঠে এসেছিল। তবে সেই সময় তিনি আইনি প্রক্রিয়ার ফাঁকফোকর দিয়ে রেহাই পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।





































