‘আমাদের নেতারা রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে বিগত ১৬ বছর লড়াই করেছে’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, “নারায়ণগঞ্জে যখন কথা বলার কেউ ছিল না তখন তরিকুল সুজন, অঞ্জন দাস, পাপিরানী সরকার, বিপ্লব আর ফারহানা মুনারা কথা বলেছে। নারায়ণগঞ্জ শহরের সমস্ত গডফাদারদের দাপট উপেক্ষা করে, প্রত্যাখ্যান করে, ভয়ের বিরুদ্ধে সাহসের কণ্ঠ হিসেবে তারা দাঁড়িয়েছে। মিছিল করেছে, সমস্ত অত্যাচারের মোকাবেলা করেছে।”
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে নিতাইগঞ্জে গণসংহতি আন্দোলন জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “স্বৈরাচার সরকার বাড়ি বাড়ি থেকে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের গুম, হত্যা করেছে। এই নারায়ণগঞ্জকে তারা হত্যার নগরীতে পরিণত করেছিল। শীতলক্ষ্যায় লাশ ডুবিয়ে রেখে একটা ভয়ঙ্কর, আতঙ্কের নগরীতে পরিণত করেছিল, ফ্যাসিস্টদের বাহিনী শামীম ওসমান ও তার লোকেরা। ত্বকীকে তুলে নিয়ে ভয়ঙ্কর নির্যাতন করে হত্যা করেছে। কোন কিছুর বিচার হয় নাই। সাত খুন হয়েছে, রাষ্ট্রবাহিনীর লোকেরা তার সাথে যুক্ত ছিল। আমাদের কষ্টার্জিত ট্যাক্সের টাকায় যাদের বেতন হয়, তারা আমাদের নিরাপত্তার বদলে আমাদের খুন করে এই শীতলক্ষ্যায় ডুবিয়ে রাখে। এইরকম ভয়ঙ্কর রাষ্ট্র বদলানো ছাড়া মানুষের কোন অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না।”
জোনায়েদ সাকি বলেন, “হাসিনা তার দামন, পীড়ন, নানা রকম কূটকৌশল, হত্যাকাণ্ড দিয়ে একটা ডামি নির্বাচন করে পার পেতে চেয়েছিল। কিন্তু লড়াইয়ের আওয়াজ ছাত্র সমাজ পর্যন্ত এসেছে। তারা যখন মাঠে নামলো, দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে পড়লেন। ছাত্র আন্দোলনে তরিকুল সুজন, অঞ্জন দাস, বিপ্লব, পপিরাণী সরকার তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। নেতৃত্বমূলক ভূমিকা রেখেছে ফারহানা মুনা। সে নারায়ণগঞ্জ শহরের পুরো ছাত্র আন্দোলনের প্রধান নেতা। পুরো আন্দোলনে ভয়ের বিরুদ্ধ সাহসের সঞ্চার করেছে।”
তিনি বলেন, “শ্রমিকদের ন্যায্য হিস্যা চাইলে অর্থনীতি‑সমাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। সরকারগুলোকে জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে। পার্লামেন্টে যেতে হবে এমন জনপ্রতিনিধিদের, যারা খেটে‑খাওয়া মানুষের ন্যায্য হিস্যার পক্ষে কথা বলবে। যদি চোর আর দুর্নীতিবাজদের সংসদে পাঠান, তবে তারা আবারও দুর্নীতিই করবে। তাই এইবার অভ্যুত্থানের পরে আপনাদের চিনতে হবে- কারা জনগণের জন্য লড়াই করেছে, কারা দাপট‑হুংকার‑অত্যাচারের রাজত্বের মোকাবিলা করে সাহসের কণ্ঠ হয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে দাঁড়িয়েছিল। আমরা যাদের মনোনয়ন দিয়েছি, সবার আগে তাদের নাম আসবে। এই নারায়ণগঞ্জ শহরে তারা লড়াই করেছে।”
সাকি বলেন, “গণসংহতি আন্দোলনের জনগণ ও দেশের বৃহত্তর স্বার্থ ছাড়া আমাদের আলাদা কোনো স্বার্থ নেই। আমরা মানুষের জন্য লড়াই করি। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকেই আমরা আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনীতি করব। আমাদের নেতাকর্মীরা সেই লক্ষ্যেই লড়াই করবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশকে সেই পথে নিয়ে যেতে পারছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা সেই লড়াই চালিয়ে যাব- এই অঙ্গীকার আমরা রাখি।”
তরিকুল‑অঞ্জন দেশ ও জাতির স্বার্থকে এগিয়ে নেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারা জনপ্রতিনিধি হিসেবে এই দেশের খেটে‑খাওয়া, নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠবে। শহীদের রক্তে যে সংস্কারকৃত বাংলাদেশ, তাকে সত্যিকার অর্থে অর্থবহ করে তোলার জন্য তারা লড়াই করবে। সেই লড়াইয়ে আপনারা তাদের সহায়তা করবেন, পাশে দাঁড়াবেন, তাদের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হবেন, জোরদার স্লোগান তুলবেন, এবং তাদের বিজয়ী করবেন।”





































