একটি দল রাজনীতির স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করছে: সালাহউদ্দিন
জামায়াতে ইসলামীর আদর্শের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “বাংলাদেশের ৯০ থেকে ৯২ ভাগ মানুষ মদিনার ইসলামের অনুসারী। আমরা কেউ মওদুদীর ইসলামের অনুসারী নই।”
যারা ফিরকা, ফেতনার মাধ্যমে দেশের মুুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায়- তাদের কাছ থেকে সাবধান থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা।
শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ‘আজমতে সাহাবা’ শীর্ষক ইসলামী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে হেফাজতে ইসলামের আমীর শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। তবে সংগঠনটির মহাসচিব সাজিদুর রহমান মঞ্চে কথা বলেন।
হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার আমীর মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি, জমিয়তে ইলামায়ে ইসলাম ও হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সবার শেষে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে সবসময়, বিশেষ করে নির্বাচনের আগে ইসলামকে রাজনীতিতে ব্যবহার করা এবং বিভিন্ন তরিকায় ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার বিষয়টি লক্ষ্য করি। ইদানিং সেইটা আরও বেশি লক্ষ্য করছি।”
তিনি ‘একটি রাজনৈতিক দল’ নির্বাচনকালীন রাজনীতির স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করে জাতিকে বিভক্ত করতে চায় বলেও মন্তব্য করেছেন।
“একটি রাজনৈতিক দল, তারা নির্বাচনের স্বার্থে, রাজনীতির স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করে জাতির মধ্যে বিভক্তি নিয়ে আসতে চায়। বিশেষ করে ইসলামের ক্ষতি করতে চায়। এজন্য বাংলাদেশে আজমতে সাহাবা সম্মেলন আরও বেশি বেশি হওয়া দরকার”, বলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি আরও বলেন, “আমরা যারা বাংলাদেশে শতকরা ৯০ থেকে ৯২ ভাগ মানুষ মুসলমান, আমরা মদিনার ইসলামের চর্চা করি এবং মদিনার ইসলামে বিশ্বাস করি। রাসুল (সা.) যে ইসলাম প্রবর্তন করে গিয়েছেন, সাহাবায়ে ক্বেরাম যে ইসলামের অনুশীলন করে গিয়েছেন, আমরা সেই ইসলামের অনুসারী। এখানে আমরা কেউ মওদুদী ইসলামের অনুসারী নই। সুতরাং যারা ফিরকা, ফেতনা তৈরি করে বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায় তাদের কাছ থেকে আমাদেরকে সাবধান হতে হবে। এবং বাংলাদেশের মুসলমানকে সহি ও দ্বীনি ইলম অর্জন এবং অনুশীলনের রাস্তা উন্মুক্ত করে দিতে হবে।”
ইসলামকে ব্যবহার করে যারা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায় তাদের কাছ থেকে দূরে থাকারও পরামর্শ দেন এ রাজনীতিক।
“এখানে কোনো রাজনীতি নেই। আমি পহেলায় বলেছি, আমাদের কাছে পহেলা দ্বীন, বাদ মে (পরে) দুনিয়া। এজন্য জন্য আমাদের চিন্তা করতে হবে- যারা রাজনীতির নামে বিভিন্ন রকমের বক্তব্য দিতে থাকে, বিভিন্ন আদর্শের কারণে, সেটা স্বাগতম। কিন্তু ইসলামকে যেন আমরা সেই জায়গায় নিয়ে না যাই, যেখানে রাজনৈতিক কারণে আমাদের দ্বীনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।”
সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার ইসলাম বিদ্বেষী সরকার ছিল। তারা মুসলিম বিদ্বেষী সরকার ছিল। আওয়ামী লীগের রাজনীতি এদেশের মানুষ দেখেছে। এটা অপরাজনীতি ও ইসলাম বিদ্বেষী রাজনীতি ছিল। রাজনৈতিক স্বার্থে তারা আলেম ও ইসলাম বিদ্বেষী রাজনীতি করেছে। আল্লাহর হুকুমে তারা কীভাবে বিদায় নিয়েছে, সবাই সে ইতিহাসের সাক্ষী।”
তিনি আরও বলেন, “ভালো আদর্শের মধ্য দিয়ে যাতে ফ্যাসিবাদী ও অপরাজনীতির সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়, সেজন্য আমাদের সঠিক পথে রাজনীতি করতে হবে, আদর্শিক রাজনীতি চর্চা করতে হবে। ভালো রাজনীতি চর্চার মধ্য দিয়ে একমাত্র দেশে অপরাজনীতি বিদায় হবে এবং আদর্শিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে।”
বক্তব্য শেষে মঞ্চে অন্যদের সঙ্গে আসরের নামাজ আদায় করেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন।





































