মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার ঘটনায় মুনার শোকবার্তা ও তদন্ত দাবি

ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ও ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর সংগঠক ফারহানা মানিক মুনা।
এক বিবৃতিতে ফারহানা মুনা বলেন, “এই মর্মান্তিক ঘটনায় আমরা গভীর শোক ও বেদনা প্রকাশ করছি। নিহতদের মধ্যে ছিলেন আমাদের প্রিয় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাধারণ নাগরিক এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর। আমরা নিহত সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য প্রার্থনা করছি।”
তিনি বলেন, “একটি রাষ্ট্র তার নাগরিকদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার যে ন্যায্য প্রতিশ্রুতি দেয়, এমন দুর্ঘটনাগুলো সেই প্রতিশ্রুতির ব্যর্থতা ও দুর্বলতাকে নির্মমভাবে উন্মোচিত করে।”
বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, এফ-৭ বিজিআই বিমানটি মূলত সোভিয়েত যুগের মিগ-২১ ফিশবেড এর চীনা সংস্করণ চেংদু জে-৭-এর উন্নত রূপ। আধুনিক গ্লাস ককপিট ও উন্নত রাডার থাকলেও এর প্রযুক্তিগত ভিত্তি প্রায় ৭০ বছর পুরনো। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ২০১৩ সালে এই সিরিজের সর্বশেষ ইউনিট গ্রহণ করে।
তিনি বলেন, “বাস্তবতা হলো, এই ধরনের বিমান পুরনো কাঠামো, সীমিত অটোমেশন এবং যান্ত্রিক দুর্বলতার কারণে অনিরাপদ হয়ে উঠছে। এ দুর্ঘটনা শুধু একটি দুঃখজনক ট্র্যাজেডি নয়, এটি আমাদের সামরিক অবকাঠামোর আধুনিকতা, প্রশিক্ষণের মান এবং জননিরাপত্তা নীতিমালার সার্বিক পর্যালোচনার দাবি তোলে।”
বিবৃতিতে ফারহানা মুনা প্রশ্ন তোলেন—ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কেন প্রশিক্ষণ ফ্লাইট পরিচালিত হয়, কেন পুরনো প্রযুক্তিনির্ভর প্রশিক্ষণ বিমান এখনও ব্যবহৃত হচ্ছে এবং কীভাবে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।
তিনি বলেন, “আমরা দাবি জানাচ্ছি, দ্রুত একটি নিরপেক্ষ ও পেশাদার তদন্ত কমিটি গঠন করে এই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন ও তা জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ, মানসিক সহায়তা এবং পুনর্বাসন নিশ্চিত করা আবশ্যক।”
এ ছাড়া তিনি প্রশিক্ষণ উড্ডয়নের স্থান ও কাঠামো নতুন করে নির্ধারণ, আধুনিক ও নিরাপদ বিকল্প প্রশিক্ষণ বিমানের ব্যবস্থা, বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার সংস্কার এবং জনগণকে সচেতন করার ওপর জোর দেন।
ফারহানা মুনা বলেন, “এই দুর্ঘটনা যেন একক কোনো মানবিক দুর্যোগ হিসেবে বিবেচিত না হয়, বরং এটি যেন একটি জাতীয় আত্মসমালোচনার উৎস হয়, যেখান থেকে আমরা শিখব, সংশোধন করব এবং ভবিষ্যতের জন্য আরও নিরাপদ, সচেতন এবং মানবিক রাষ্ট্র নির্মাণের পথে এগিয়ে যাব।”