০৮ জুলাই ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৮:২১, ৭ জুলাই ২০২৫

এবার তুহিন হত্যা মামলায় আইভী রিমান্ডে, আরেক মামলায় জামিন নাকচ

এবার তুহিন হত্যা মামলায় আইভী রিমান্ডে, আরেক মামলায় জামিন নাকচ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইদিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

সোমবার (৭ জুলাই) দুপুর আড়াইটায় শুনানি শেষে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মঈনুদ্দিন কাদির এ আদেশ দেন।

মামলাটিতে পুলিশ সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান।

একইদিন জেলা ও দায়ার জজ আদালতে ফতুল্লা থানার আরেকটি হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ও বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় আইভীর জামিন শুনানি হয়। শুনানি শেষে বিচারক আবু শামীম আজাদ জামিন নামঞ্জুর করে দেন বলে জানান এ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (ভারপ্রাপ্ত) ওমর ফারুক নয়ন।

উভয় মামলায় আসামির পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন। এবং রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ওমর ফারুক নয়ন।

এ সময় গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে ভার্চুয়ালি শুনানিতে অংশ নেন সাবেক সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী।

আদালত পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়ের করা রিকশাচালক মো. তুহিন হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। গত ৩০ জুন একই আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী তখন এ মামলায় উচ্চ আদালতে আসামির জামিন আবেদন করেছেন জানিয়ে ওই আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রিমান্ড শুনানি স্থগিত রাখার আবেদন জানান।

আদালত বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে রিমান্ড শুনানির তারিখ ৭ জুলাই নির্ধারণ করেন।

আওলাদ হোসেন বলেন, “আমরা উচ্চ আদালতে জামিন শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত রিমান্ড শুনানি স্থগিত রাখতে পুনরায় আবেদন জানাই। এ বিষয়ে আমরা সংবিধানের রেফারেন্সে বক্তব্যও উপস্থাপন করি। কিন্তু আদালত তা আমলে না নিয়ে দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন। সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদে পরিষ্কার বলা আছে, উচ্চ আদালতের বিষয় নিম্ন আদালতের মানার বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু আমার ওকালতি জীবনে প্রথম দেখলাম যে, উচ্চ আদালতে পেন্ডিং কোনো মামলা, যার এখনও কোনো আদেশ আসে নাই, সেই মামলায় দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।”

এর আগে অপর দু’টি হত্যা মামলায় আইভীকে দুই দফায় চারদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

মামলার নথির সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২০ জুলাই বিকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান রিকশা চালক মো. তুহিন। পরে ১৩ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী আলেয়া আক্তার মিম।
ওই হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৯৯ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। আইভী এ মামলার ১১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।

এদিকে, গত বছরের ১৯ জুলাই আন্দোলনের সময় ফতুল্লার দেলপাড়া এলাকায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কে আহত হন মো. সাঈদ ওরফে চাঁদ মিয়া। পরে সেপ্টেম্বরে ফতুল্লা থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন আহত ওই ব্যক্তি।

এ মামলাটিতে আইভীর জামিন আবেদন করলে জেলা ও দায়রা জজ আদালত তা নামঞ্জুর করে দেন বলে জানান আওলাদ হোসেন।

গত বছর ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৯ অগাস্ট দেশের বাকি সিটি করপোরেশনগুলোর মত টানা তিনবার নির্বাচিত মেয়র আইভীকেও অপসারণ করে অন্তর্র্বতী সরকার। এরপর ৩ সেপ্টেম্বর পোশাক শ্রমিক মিনারুল ইসলাম হত্যা মামলায় প্রথমবার আসামি করা হয় সেলিনা হায়াৎ আইভীকে।

চলতি বছরের ৯ মে সকালে মিনারুল হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ নগরীর দেওভোগ এলাকার নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন আইভী।

জুলাই-অগাস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় দায়ের করা অন্তত ছয়টি মামলায় সাবেক এ সিটি মেয়রকে আসামি করা হয়েছে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়