আওয়ামী লীগের শাটডাউনে সাড়া দেয়নি নারায়ণগঞ্জবাসী
মানবতাবিরোধী অপরাধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির প্রভাব পড়েনি নারায়ণগঞ্জে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকে শহরে যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। খোলা ছিল মার্কেটসহ সকল ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিনের মতো কর্মমুখী মানুষরা ছুটছিলেন নিজ নিজ কর্মস্থলে।
শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো- কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, দুই নম্বর রেলগেট ও চাষাড়া পরিদর্শন করে দেখা গেছে, এলাকাগুলো কর্মমুখী মানুষের পদচারণায় সরগরম। নিত্যদিনের মতো স্বাভাবিক যান চলাচল হলেও শহরে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের টহল দল লক্ষ্য করা গেছে।
রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার ইসদাইর এলাকায় নারায়ণগঞ্জ আয়কর অফিসের সামনে পার্কিং করা একটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ দগ্ধ হয়নি।
এদিকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির বিরোধিতায় বঙ্গবন্ধু সড়কে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম, খেলাফত মজলিসসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে। দুপুরে রায় ঘোষণার পর শহরে মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল করে এন.সি.পি. নেতাকর্মীরা।
দুই সীটের তিন চাকার গাড়ি (মিশুক) চালক নুর ইসলাম বলেন, “প্রতিদিনের মতো আজকেও সকাল সকাল গাড়ি নিয়ে এসেছি। কিসের শাটডাউন? কিছুই জানি না।”
ঢাকাগামী যাত্রী শহিদুল ইসলাম বলেন, “কিছুটা আতঙ্ক থাকলেও অফিসে যেতে হবে, তবে তেমন কিছু হবে বলে মনে করছি না।”
তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী রাব্বি সরকার বলেন, “কোন ধরনের ভয় বা আতঙ্ক লাগেনি। আজকে ক্লাস ছিল, তাই এসেছি। আমাদের কলেজ থেকেও কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে নিরাপত্তা দিচ্ছে, তা দেখার পর আর কোনো আতঙ্ক বা ভয় কাজ করছে না।”
পথচারি মেহেদি হাসান রুবেল বলেন, “বর্তমান যুগের মানুষ অনেক সচেতন। তাদের (আওয়ামী লীগ) ফাঁদে কেউ পড়বে না। অন্যান্য দিনের মতো আজকে সব কিছু স্বাভাবিক মনে হচ্ছে।”
বন্ধন পরিবহনের মালিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “শাটডাউনের প্রভাব পরিবহন সেক্টরে পড়েনি। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা ভয় থাকার কারণে যাত্রীর সংখ্যা কিছুটা কম।”
বন্ধন কাউন্টার ম্যানেজার মো. তাজ বলেন, “আজকে আধা ঘণ্টা পরে গাড়ি ছেড়েছি। অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিকভাবে আমাদের গাড়ি চলাচল করছে। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহদী জানান, দিনব্যাপী সতর্ক অবস্থানে ছিল নারায়ণগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রত্যেক উপজেলা, থানা, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন, ৯ জায়গায় তল্লাশি চৌকি এবং ২৬টি মোবাইল টিম কাজ করেছে। এছাড়া যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
গত ১৭ ঘণ্টায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়ছে বলে নিশ্চিত করেন এই কর্মকর্তা।





































