ব্যবসায়ী সোহাগ অপহরণের ঘটনায় মামলা
নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি মো. সোহাগকে পটুয়াখালীর পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাট এলাকা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধারের ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় অপহরণ মামলা হয়েছে। অপহৃতের স্ত্রী তানিয়া আহমেদ মঙ্গলবার (৩ জুন) রাতে মামলাটি দায়ের করেন।
মো. সোহাগ নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক, মীম শরৎ গ্রুপ এবং শাহজালাল নেভিগেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্ব বা পূর্বশত্রুতার জের ধরেই এ অপহরণের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে পরিবারের ধারণা।
সোহাগ নিখোঁজ হন গত ১ জুন। সেদিন দুপুরে তিনি ব্যবসায়িক কাজে ঢাকার সচিবালয়ের খাদ্য ভবনে যান এবং রাত সাড়ে ১১টার দিকে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এরপর থেকে তার ও গাড়িচালক কবিরুলের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।
পরদিন ২ জুন দুপুরে পটুয়াখালীর পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাট এলাকায় একটি পরিত্যক্ত গাড়ির ভেতর থেকে বন্ধুর মোবাইলে ফোন করে সোহাগ জানান, তিনি অপহরণকারীদের হাতে পড়ে আহত হয়েছেন এবং তাকে ফেলে রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান জানান, অপহরণের উদ্দেশ্য, কারা এতে জড়িত এবং পেছনে কী মোটিভ রয়েছে, তা জানতে পুলিশ সবদিক থেকে তদন্ত করছে। তিনি আরও জানান, অপহরণকারীরা দুটি গাড়ি ব্যবহার করেছে, যেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। তবে চালক কবিরুলের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। তিনি অপহৃত, নাকি ঘটনার সঙ্গে জড়িত, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে তারা পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাট এলাকায় যায়। সেখানে একটি প্যারাডো (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৮-৭০৯৪) ও একটি প্রিমিও (ঢাকা মেট্রো-গ ৪২-৬৭৩২) গাড়ির ভেতরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মো. সোহাগকে পাওয়া যায়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায়, সকাল ৬টা থেকে গাড়ি দুটি ঘাট এলাকায় পার্ক করা ছিল। প্রায় চার ঘণ্টা পর এক গাড়ির ভেতর থেকে হাত নাড়তে দেখে তারা এগিয়ে যান এবং সোহাগকে দেখতে পান।
পরে সোহাগ জানান, সরকারি তোলারাম কলেজের সামনে থেকে অস্ত্রের মুখে তাকে তুলে নেওয়া হয়। এরপর সাইনবোর্ড এলাকায় তাকে প্রচণ্ড মারধর করে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীতে নিয়ে যাওয়া হয়।
উদ্ধারের পর তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের সহায়তায় তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হেলিকপ্টারে করে তাকে ঢাকায় আনা হয় এবং বর্তমানে তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল থাকলেও আশঙ্কামুক্ত।





































