২২ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২২:১৯, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

দ্বিগুণ শক্তিতে ফিরেছেন বিএনপি প্রার্থী মাসুদুজ্জামান

দ্বিগুণ শক্তিতে ফিরেছেন বিএনপি প্রার্থী মাসুদুজ্জামান

আবারও প্রচারণায় ফিরেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ। তবে, এবার তার কর্মীবাহিনী ও শক্তি আরো বেড়েছে। দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে ভোটের মাঠে আবারও সক্রিয় ধানের শীষের এ প্রার্থী।

যদিও নিরাপত্তাজনিত শঙ্কায় সম্প্রতি তার নির্বাচন না করার ঘোষণা সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। কিন্তু দলীয় নেতা-কর্মীদের অনুরোধে তিনি আবারও দল-ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ভোটের মাঠে নিজের উপস্থিতি জানান দিয়েছেন। রোববার তার সঙ্গে দলীয় প্রচারে হাজারো নেতা-কর্মীর উপস্থিতি দেখা যায়।

গত ৩ নভেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সারাদেশে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনটিতে ব্যবসায়ী নেতা ও ক্রীড়া সংগঠক মাসুদুজ্জামান মাসুদের নাম ঘোষণা করে দল। যদিও আসনটিতে মহানগর বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতাও মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।

তাকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও মনোনয়ন-বঞ্চিত নেতাদের বিরোধীতার মুখে পড়েন তিনি। সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, ব্যবসায়ী আবু জাফর আহমেদ বাবুল ধানের শীষের প্রার্থীর বিরুদ্ধে একাট্টা হন। তারা মাসুদের প্রার্থিতা বাতিলেরও দাবি জানান।

মনোনয়ন-বঞ্চিতদের পাশে না পেলেও শুরু থেকেই দলটির তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হন মাসুদুজ্জামান। তার ডাকে সাড়া দিয়ে শহর-বন্দর চষে বেড়িয়েছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। স্বচ্ছ ব্যক্তিত্ব ও সমাজসেবক হিসেবে পূর্বপরিচিতি থাকায় মাসুদুজ্জামান সাড়া পান সাধারণ মানুষজনের।
এমনকি শুরুর দিকে বিরোধীতা করা কয়েকজন নেতাকেও পাশে পান মাসুদুজ্জামান। দলীয় নির্দেশনা মেনে আবু আল ইউসুফ খান টিপুও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নামেন। কিন্তু হঠাৎ করেই গত ১৬ ডিসেম্বর মাসুদুজ্জামান নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়ে বসেন। এতে অবাক হন নেতা-কর্মীরাও।

বিজয় দিবসের দুপুরে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে মাসুদুজ্জামান জানান, পরিবারের সদস্যরা তার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। শরিফ ওসমান হাদিকে প্রকাশ্যে গুলির ঘটনার পর এই শঙ্কা আরও বেড়েছে। পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে তিনি এ নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলে জানান। এমনকি নির্বাচন কমিশনের মনোনয়নপত্রও কিনবেন না।

কিন্তু দলীয় প্রার্থীর এমন সিদ্ধান্ত মেনে নেননি নেতা-কর্মীরা। তারা তাৎক্ষনিক প্রতিবাদও জানান। এমনকি মাসুদুজ্জামানকে নির্বাচনী মাঠে ফেরাতে বিক্ষোভ মিছিলও করেন। পরে গত শুক্রবার মাসুদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে জড়ো হয়ে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী পুনরায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

বিএনপির নেতারা বলেন, প্রয়োজনে দলীয় কর্মীরা পাহারা দিয়ে প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। কিন্তু তারপরও মাসুদকে এ নির্বাচন করতে হবে। কেননা, তারা এই আসনে তার বিকল্প কাউকে দেখছেন না।

পরে নেতা-কর্মীদের অনুরোধে নির্বাচনী মাঠে ফেরার ঘোষণা দেন মাসুদুজ্জামান।

এই ঘোষণার একদিন পরেই আবারও নিজের শক্তি ও সামর্থ্যরে প্রমাণ দিয়েছেন ধানের শীষের এ প্রার্থী। দলেরই শীর্ষ নেতাদের বিরোধীতা থাকার পরও তৃণমূলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের সমাগম ঘটিয়ে নিজের শক্তি প্রদর্শন করেছেন তিনি। দলের ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি আবারও নিজের গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা। এমনকি মাসুদের দৃঢ়তা এবং সক্রিয় প্রচারণা দলীয় কর্মীদের মধ্যে আস্থা জাগিয়েছে।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, মাসুদের দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে ফিরে আসা এবং দলীয় সমর্থকদের একত্রিত করা তাকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের নির্বাচনী লড়াইতে একটি শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তার সক্রিয় উপস্থিতি ও রাজনৈতিক দৃঢ়তা দলের ভিতরে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছে এবং আসনটি জয়ের সম্ভাবনাকে বাড়িয়েছে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়