ফেরি দুর্ঘটনায় পিতৃহীন রফিকের দুই শিশু সন্তান
স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মোটরসাইকেলে শ্বশুর বাড়ি বক্তাবলী যাচ্ছিলেন ভোলাইল এলাকার বাসিন্দা মো. রফিক। শিশুদের মনে নানু বাড়ি যাওয়ার আনন্দ। ধলেশ্বরী নদী পার হওয়ার জন্য গাড়ি নিয়ে উঠেছিলেন ফেরিতে। কিন্তু মুহূর্তেই আনন্দের এই যাত্রা পরিণত হল শোকে। আর পিতৃহীন হয়ে পড়ে রফিকের দুই অবুঝ শিশু। যারা এখনো বুঝে উঠতে পারেনি তাদের প্রিয় বাবা আর নেই।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে ধলেশ্বরী নদীতে ফেরি পারাপারের সময় একটি ট্রাকের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ওই ট্রাকসহ ৫টি যান নদীতে পড়ে যায়। সেই পাঁচটি যানের মধ্যে একটি ছিল মো. রফিকের মোটরসাইকেলটি।
ঘটনার সময় রফিক, তার স্ত্রী পিংকি ও দুই সন্তান নিয়ে মোটরসাইকেলেই ছিলেন। ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেলসহ রফিক পানিতে পড়ে গেলেও ভাগ্যক্রমে ফেরিতে পড়েন স্ত্রী-সন্তানরা। ওই সময় ফেরিতে থাকা লোকজন রফিককে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রফিকের স্ত্রী পিংকি বলেন, “স্বামীর বাড়ি ফতুল্লার ভোলাইল থেকে মোটরসাইকেলে আমার বাবার বাড়ি যাচ্ছিলাম। ধলেশ্বরী নদী পার হওয়ার সময় ফেরিতে একটি ট্রাক আমাদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এসময় মোটরসাইকেলসহ দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে আমি ফেরিতে পড়ে যাই। তখন ট্রাকটি আমার স্বামীকে নিয়ে পানিতে পড়ে যায়। ”
এ দুর্ঘটনায় মো. রফিকসহ আরও তিনজনের মৃত্যু হয় বলে জানায় নৌ পুলিশ।
বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম জানান, ফেরি চালক কাউকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কেউ নদীর কোথায় যান ডুবেছে তা নিশ্চিত করে জায়গা দেখাতে পারেনি। নদীতে ডুবে যাওয়া স্থান শনাক্ত ও নদীর গভীরতা মেপে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ঘটনায় সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. রায়হান কবির। তিনি বলেন, “এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাইমা ইসলামকে প্রধান করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই সাথে তাদের আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।”





































