২১ আগস্ট ২০২৫

প্রকাশিত: ২১:৫৬, ১৩ জুলাই ২০২০

আপডেট: ২১:৫৬, ১৩ জুলাই ২০২০

আলীরটেকে পানির নিচে কৃষকের ফসল, ক্ষেতে জমেছে শ্যাওলা

আলীরটেকে পানির নিচে কৃষকের ফসল, ক্ষেতে জমেছে শ্যাওলা

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: চারদিকে থৈ থৈ পানি। পানির নিচে ডুবেছে কৃষকের ফসল। ধানের চারা পচে গেছে। ক্ষেতে জমেছে শ্যাওলা, জন্মেছে শালুক। কেবল ধানের চারাই নয় ডুবেছে ঢেঁড়শ, লাল শাক, পুই শাক, ডাটাসহ কয়েক ধরণের সবজি। ধলেশ্বরীর পানি বেড়ে গেলে প্রায় বছরই এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চর আলীরটেকের কৃষকরা।

কথা হয় কয়েকজন কৃষকের সাথে। তারা জানান, বেশ উর্বর এই জমি। একই জমিতে একাধিক ফসলের চাষ হয়। তবে বেশ নিচু হওয়ায় বর্ষায় নদীর পানি বাড়লেই ডুবে যায় জমিগুলো। কৃষকরাও নদীর উচ্চতার দিকে নজর রেখে ফসল ফলান। তবে এ বছর হিসেবের ১৫ দিন আগেই ভারী বর্ষণের কারণে জমিতে পানি উঠে আসে। পানি স্থায়ী হওয়ায় পচে যায় ফসল।

সোমবার (১৩ জুলাই) সকালে সরজমিনে দেখা যায়, চর আলীরটেকের অধিকাংশ ফসলি জমি ডুবে আছে পানির নিচে। সবুজ ঢেঁড়শ গাছ পচে লাল হয়ে আছে। কিছু কিছু গাছে কিছু ঢেড়শ দেখা গেলেও তা আর খাবার যোগ্য নেই। তাই অনেকে ঢেঁড়শ গাছ কৃষক কেটে ফেলে রেখেছেন জমির পাশে। ধান খেতে দেখা মেলেনি ধানের চারার। বেশ কিছুদিন পানির নিচে থাকায় মাঠের ধানের চারা পচে মিলে গেছে পানির সঙ্গে। ক্ষেতে জন্মেছে সবুজ শ্যাওলা আর শালুক।

পানির নিচ থেকে পচা ধানের চারা তুলে দেখালেন কৃষক গোলাম হোসেন। বলেন, ‘ধান আর সবজি সব শ্যাষ। এই মৌসুমে ক্ষেতে আর কোনো ফসল হইবো না। ক্ষেত থেকে পানি নামলেও এবার আর ধান চাষ করা যাইবো না। এ বছর সব গেরস্থের চাল বাজার থেকে কিনেই খেতে হবে। নতুন করে জমি তৈরি করার অবস্থাও কারোর নাই।’

গোলাম হোসেন জানান, দেড় লাখ টাকা খরচ করে সাড়ে চার একর জমিতে এ বছর আমন ধানের বীজ রোপন করেছিলেন তিনি। ধানের সঙ্গে একই জমিতে ঢেঁড়শ এবং উপরের জমিতে পাট, পুঁই শাক ও ডাটা চাষ করেন তিনি। কিন্তু বর্ষার পানি এখন আর কিছুই নেই। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর আমনসহ একাধিক ধান চাষ করি। তার মধ্য থেকে ২৫-৩০ মণ ধান নিজেদের খাবার জন্য রেখে বাকিগুলো বিক্রি করে দেই। একই আশায় এ বছরও ধান চাষ করেছিলাম কিন্তু চারা বড় হওয়ার আগেই তা পানিতে ডুবে যায়। তার সঙ্গে পচেছে সবজিও। এতে আমার দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

আরেক কৃষক ফালান মিয়া এ বছর ১ কানি জমিতে ধান, করলা ও ঢেঁড়শের চাষ করেছিলেন। গোলাম হোসেনের মত তার জমিও পানির নিচে। ফালান মিয়া বলেন, ‘প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ করে ১ কানিতে চাষাবাদ করেছিলাম। বর্ষার পানিতে সব তলিয়ে গেছে। উচু জমির কিছু ঢেঁড়শ ও কিছু শাক-সবজি বিক্রি করেছিলাম। তাও ৫, ৬ হাজার টাকার মত।’

মো. নাসির বলেন, ‘নামে আমরা সদর উপজেলায় বসবাস করি। আমাদের এলাকা কৃষিভিত্তিক হলেও কখনও কোনো কৃষি কর্মকর্তা এখানে আসে না। আমাদের খোঁজ নেয় না। আমাদের ফসল নষ্ট হলো না কি হলো কোনো কিছুই জানতে চায় না। করোনার জন্য দেশে কত কৃষকদের বীজ, প্রণোদনা দেয়া হলো কিন্তু আমাদের এলাকার একজন কৃষকও কিছু পেলো না।’

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়