ড্রেনেজ প্রকল্পে ধীরগতিতে ভোগান্তি এলাকাবাসীর, বাড়ছে ডেঙ্গু শঙ্কা
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা এনায়েতনগর ইউনিয়নের নয়াবাজার এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার সড়কে ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রকল্প নেওয়া হলেও তা ধীরগতিতে চলছে। যদিও স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগ বলছে, কাজটি দ্রুত শেষ করতে তারা পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
তবে, স্থানীয়রা বলছেন ড্রেনের নির্মাণ কাজের ধীরগতির কারণে সড়কের একাংশ গর্ত করে রাখা হয়েছে যা মানুষজনের চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি করছে। অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। সড়কের উপরও খনন করা মাটি স্তুপাকারে রাখায় যানবাহন চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মুসলিমপাড়া পুরাতন নয়াবাজার থেকে আমেনা সুপার মার্কেট পর্যন্ত বালুর বস্তা, ইট ও বাঁশ ফেলে সড়ক পারাপার করছেন স্থানীয়রা। নোংরা পানিতে মশার লার্ভাও ভাসতে দেখা যায়। এ অঞ্চলের অনেকেই গত কয়েক মাসে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন।

স্থানীয় মাদরাসা শিক্ষার্থী মো. ইমন বলেন, “এই ময়লা পানি দিয়ে চলাচল করতে হয়। এতে আমার দু’বার চুলকানি হয়েছিল। এখন মাদরাসায় থাকি বাসায় যাই না।”
এই এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে বাসায় ভাড়া হচ্ছে না। পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র-ছাত্রী ঠিকমতো ক্লাসে আসছে না। প্রশাসনিকভাবে যারা দায়িত্বে আছেন, তারা যেন দ্রুত সময়ে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির প্রত্যাশা স্থানীয় বাসিন্দা আহম্মদ হোসেনের।
মুসলিম নগর বাজার জামে মসজিদের সহসভাপতি মো. আলম বলেন, “আমরা দ্রুত কাজের জন্য প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছিলাম, দ্রুত আশ্বাস দিলেও এখনও কোন সুফল এলাকাবাসী পাচ্ছি না। ১৫ দিন আগে এই সড়কটিতে কাজ ধরেছিল, কিন্তু তারা তিনদিন ভেকু (এক্সাভেটর) দিয়ে কাজ করার পরে এখান থেকে চলে যায়। পরে কাজও বন্ধ হয়ে যায়।”

এলাকায় হেঁটে হেঁটে পান-সিগারেট বিক্রি করেন আমির হোসেন। তিনি বলেন, “রাস্তার উপর ইট ফেলে চলাচল করতে হয়। মাঝে মাঝে লোকজন পানিতেও পড়ে যায়। সরকারি কর্মকর্তারা তো কাজ ধরছে, মাটি কাইট্টা খালি থুইয়া দিছে। এখন আমাদের তো চলাফেরায় কষ্ট হয়, তাদের তো হয় না।”
“আমরা তো খুচরা বেচা-কিনা করি রাস্তায় হেঁটে হেঁটে। এই রাস্তায় দিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হয়। পড়ে গেলে সব মালামাল নষ্ট হয়ে যাবার ভয়েও থাকি।”
সংস্কার প্রকল্প কাজ দ্রুত শেষ করার আশাবাদ ব্যক্ত করে স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগের নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকৌশলী ইয়াছির আরাফাত রুবেল বলেন, “ড্রেনেজটি নির্মাণকাজ চলছে। বৃষ্টির কারণে কাজ একটু আটকে গেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অস্থায়ীভাবে পাইপ বসানো হয়েছে। কিছু দোকানপাট সরানোর কথা, কিন্তু মালিকরা সরাচ্ছেন না। এতেও কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। তবে দ্রুত কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চাপ দেওয়া হচ্ছে।”
আগামী ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারি মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন সংস্কার প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এ কর্মকর্তা।





































