১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৯:৩৯, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

‘বন্দরে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে’

‘বন্দরে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে’

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী এলাকায় ঘরে ঘরে গিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন—এমন অভিযোগ করেছেন জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মাওলানা আবদুল জব্বার বলেন, “শোনা যাচ্ছে ওই প্রার্থী এলাকায় গিয়ে বলছে—আমরা অমুকের লোক, তোমরা বের হলে খবর আছে। বিগত ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত লোকেরা কীভাবে ও কোন সাহসে এলাকায় এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখায়, তা আমাদের বোধগম্য নয়।”

নির্বাচনকে ঘিরে এ ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকির বিষয়ে প্রশাসনের সতর্ক দৃষ্টি প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা প্রত্যাশা করি প্রশাসন বিষয়গুলো খোঁজখবর রাখবে—কারা এসব করছে, কার হাত কতটা লম্বা। তবে এ দেশের মানুষ এবং আমরা যারা রাজনীতি ও সামাজিক কাজে যুক্ত, তারা এ ধরনের হুমকিতে ভয় পাবে না।”

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে মেধাশূন্য করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড জাতিকে গভীরভাবে বেদনাহত করেছে এবং প্রজন্মের পর প্রজন্মকে ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ থেকে বঞ্চিত করেছে।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তী সময়েও শিক্ষা ও নেতৃত্বের বিভিন্ন স্তরে দলীয়করণ ও কোটা ব্যবস্থার বেড়াজালে প্রকৃত মেধার মূল্যায়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। “যদি নিরপেক্ষভাবে মেধার মূল্যায়ন করা যেত, তাহলে গত ৫৪ বছরে যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হতো,” বলেন তিনি।

মাওলানা আবদুল জব্বার বলেন, এখনো পর্যন্ত প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সঠিক সংখ্যা জাতির সামনে স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। ভবিষ্যতের নতুন সরকার যেন এ বিষয়ে স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য তথ্য দলিলসহ জনগণের সামনে তুলে ধরে—এ দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, “একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে একসময় এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেন এটি শুধু একটি পক্ষের সম্পদ। অথচ এই স্বাধীনতা আমাদের সবার। এখানে বিভাজন নয়, ঐক্য প্রয়োজন।” একই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেন, জুলাই ২৪-এর গণআন্দোলনের অর্জনকেও কেউ কেউ জোরপূর্বক নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে, যা জনগণ মেনে নেবে না।

নির্বাচন প্রসঙ্গে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, “যদি জনগণের ন্যূনতম অধিকার—সুস্থ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন—নিশ্চিত করা না হয়, তাহলে জনগণই একসময় নিজের হাতে দায়িত্ব তুলে নিতে বাধ্য হবে।”

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. রায়হান কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আহসান শহীদ সরকার, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল ইসলাম সুজন, জাতীয় নাগরিক পার্টির জেলার প্রধান সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ আল আমিন, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি দ্বীন ইসলাম, মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, খেলাফত মজলিসের নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রার্থী ইলিয়াস আহমদ, গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি মো. নাহিদ, মহানগরের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আরিফ ভূঁইয়া, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিরব রায়হানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়