১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৮:২৩, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

‘দেশে মব সন্ত্রাসের আতঙ্ক বিরাজ করছে’

‘দেশে মব সন্ত্রাসের আতঙ্ক বিরাজ করছে’

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় এ কর্মসূচি শুরু হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে এক ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ছাত্র সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক নাসিমা আক্তার। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির সদস্য রোকন আহাম্মেদ, সরকারি তোলারাম কলেজের সংগঠক ইফতি আহাম্মেদ জিহাদ, সরকারি কদম রসুল কলেজ শাখার নেতা আহাম্মেদ রবিন স্বপ্ন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ কলেজ শাখার সংগঠক লাগারথা লিথী, সাবরু আরাফাত লিয়ন, প্রভাতী আক্তারসহ বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা।

বক্তারা বলেন, ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জনগণের জন্য একদিকে শোকাবহ, অন্যদিকে গৌরবময় দিন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রান্তে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর আলবদরদের পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞে দেশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীরা শহীদ হন। তারা একটি শোষণমুক্ত, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও মুক্তিযুদ্ধের কেন্দ্রীয় চেতনা- সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার আজও পূর্ণতা পায়নি। বরং সাম্যের বিপরীতে সমাজে পাহাড়সম বৈষম্য তৈরি হয়েছে। বিগত ক্ষমতাসীন বুর্জোয়া রাজনৈতিক দলগুলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। মুখে মুক্তিযুদ্ধের কথা বললেও আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা থেকে সরে গিয়ে দেশ শাসন করেছে এবং মৌলবাদী রাজনীতির বিকাশের ক্ষেত্র তৈরি করেছে বলেও তারা অভিযোগ করেন।

তারা আরও বলেন, গত বছরের জুলাই-আগস্টে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর প্রায় দেড় বছর পার হলেও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও ১৯৭১-এর পরাজিত শক্তির আস্ফালন সীমা ছাড়িয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতি পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে ‘২৪-এর চেতনা’কে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে।

বক্তারা অভিযোগ করেন, কথিত তৌহিদী জনতার নামে নারীদের পোশাক নিয়ে মোরাল পুলিশিং, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন বৃদ্ধি পেয়েছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত কিংবা কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সাম্প্রদায়িক অপশক্তির হামলার শিকার হচ্ছেন। দেশে মব সন্ত্রাসের আতঙ্ক বিরাজ করছে, যা কোনো স্বাধীন দেশের জনগণের জন্য কাম্য নয়।

সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা এবং তার ধারাবাহিকতায় ‘২৪-এর চেতনায়’ একটি গণতান্ত্রিক, শোষণ-বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তারা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকারী, ১৯৭১ সালের গণহত্যা এবং ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়