দলে অনুপ্রবেশকারী ‘চাঁদাবাজ-টেন্ডারবাজদের’ সতর্ক করলেন সাখাওয়াত

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর আওয়ামী লীগের কিছু দোসর বিএনপির ভিতরে প্রবেশ করেছে। তারা বিএনপির নামে চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী এবং বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করছে। তাদেরকে সাবধান করে দিতে চাই। তাদেরকে দলে কোন স্থান দেওয়া হবে না। তাদের স্থান হবে জেলখানা। আমাদের নেতা তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছেন এই ধরনের লোকদের দলে কোন স্থান দেওয়া হবে না। বিএনপিতে নতুন কিছু লোক জন্ম নিছে যারা বিএনপির নাম করে দুই একটা অনুষ্ঠান করে নতুন সদস্য জমা দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। জনগণকে তারা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তারা দেশের শত্রু বিএনপির শত্রু। তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে।
বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেলে বন্দরে সিটি কর্পোরেশন ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচীতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একা বিএনপি করতে চাই না। সকলকে নিয়ে করতে চাই, শুধুমাত্র দুষ্টদের ছাড়া। একবার যারা দুষ্টুমি করে তারা বারবার করার চেষ্টা করবে। বহিষ্কৃতদের উচিত ছিল নিজেদের সংশোধন করা। দলের পক্ষে থেকে যেভাবে বলবে, সেভাবে চললে বহিষ্কারাদের প্রত্যাহারের সুযোগ হবে। কিন্তু বহিষ্কারের পর তারা যে ভূমিকা পালন করেছে, দল ও দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সুতরাং তাদের স্থান বিএনপিতে হবে না।
সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘গত পনেরো বছর বিএনপির কিছু লোক যারা আওয়ামী, জাতীয় পার্টি মার্কা বিএনপি তারা নাসিম ওসমান, সেলিম ওসমান, শামীম ওসমান ও আইভীর দালালি করেছে। ২০১৮ সালে বিএনপি নির্বাচনে গিয়েছিল। ওই সময় কিছু কুলাঙ্গার নেতারা কেন্দ্রে গিয়ে, বিএনপি প্রার্থী আকরামের পক্ষে যে গিয়েছে তাদের গলা ধরে বের করে দিয়েছে অথবা পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছে। যারা এসব কাজ করেছে তারা বিএনপির লোক হতে পারে না। এগুলো আপনাদের বুঝতে হবে বিশ্বাস করতে হবে।
তৈমূর আলম ও তৃণমূল বিএনপির সমালোচানা করে তিনি বলেন, ‘আমাদের কমিটি হয়েছে ২০২২ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর। কমিটি হওয়ার পরে দুইদিন বিএনপির পনেরো জন নেতা পদত্যাগ করেছে। সেই পদত্যাগপত্র যে জমা দিয়েছে সে বিএনপির সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে। যদি ২০২৪ সালে ওই তৃণমূল বিএনপি করে তারা যদি নির্বাচনে না যেত তাহলে সে সময় নির্বাচন হতো না। সে ভুয়া বিএনপি করে সেই তৈমুর আলম খন্দকারের কাছে যারা পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছে তাদের বিএনপি করার কোন অধিকার নাই।
অন্তবর্তী সরকার জনগণের কাক্সিক্ষত মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এ সরকারের প্রতি জনগণের কিছু প্রত্যাশা আছে। জুলাই বিপ্লবে হত্যার বিচার করতে হবে, পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনতে হবে, ভোটের অধিকার নিশ্চিত করবে। কিন্তু আমরা দেখছি, সরকারকে বিভ্রান্ত করার জন্য দেশী-বিদেশী চক্রান্ত শুরু হয়েছে। সে চক্রান্তে পা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন এবং নবগঠিত চিলড্রেনস পার্টি এনসিপি। তারা ক্ষমতায় আসতে চায়। আসুক আমাদের আপত্তি নেই, যদি জনগণ চায়। বিএনপিকে পরাজিত করে জনগণের ভোটে আপনাদের ক্ষতায় আসতে হবে। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপিকে পরাজিত করার মতো শক্তি নাই।
আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নাই। সকল অঙ্গসংগঠন ও সহযোগী সংগঠন ঐক্যবদ্ধ। বিএনপি যদি একটা গাছ হয় আমরা সবাই একেকটি ডাল। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমনে দল সুফল পাবে। আমাদের নেতা জনগণের প্রতি জনগণের আস্থা রেখেছেন আমাদেরও রাখতে হবে। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন দেশের ৭০ ভাগ মানুষ ধানের শীষে ভোট দিবে। জনগণের পক্ষ থাকতে হবে। দলের চেইন অব কমান্ড মেনে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
নাসিক ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রমজান আলীর সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, মহানগর বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ্ মো. রেজা রিপন, বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেন শাহ আহাম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির উল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আসাদুজ্জামান বাদল প্রমুখ।