১৯ জুলাই ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ১৮ জুলাই ২০২৫

নারায়ণগঞ্জ বাংলাদেশের ’বাতিঘর’, ইতিহাস দখল হতে দেবো না: মুনা

নারায়ণগঞ্জ বাংলাদেশের ’বাতিঘর’, ইতিহাস দখল হতে দেবো না: মুনা

নারায়ণগঞ্জকে বাংলাদেশের রাজনীতির 'বাতিঘর' আখ্যায়িত করে ইতিহাস দখলদারদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নারায়ণগঞ্জ সভাপতি ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা ফারহানা মানিক মুনা। তিনি বলেন, “এই অভ্যুত্থান কারও একক সম্পত্তি নয়। এটি ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার সংগ্রামের ফসল। কেউ জমি দখলের মতো করে কিংবা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের মতো করে এই অভ্যুত্থান দখল করতে পারবে না।”

শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেলে চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণসংহতি আন্দোলনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘সমাবেশ ও শহিদী মার্চ’ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন গণসংহতির প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।

ফারহানা মুনা বলেন, “বাংলাদেশ যখনই অন্ধকারে পথ হারিয়েছে, তখনই দিশা দেখিয়েছে নারায়ণগঞ্জ। গণঅভ্যুত্থানে যখন সারা দেশের আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়েছিল, তখন নারায়ণগঞ্জই আন্দোলনের মশাল জ্বালিয়ে রেখেছিল। যারা আজ এই অভ্যুত্থানের ইতিহাস দখল করতে চায়, তাদের একরৈখিক বয়ানের বিরুদ্ধেও নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। এই শহর গডফাদারদের মতো ইতিহাস দখলকারীদেরও প্রতিহত করবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা এক মরণপণ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই শহরকে গডফাদারমুক্ত করেছি। যারা 'খেলা হবে'র নামে সন্ত্রাস করতো, তারা আজ শহর ছেড়ে পালিয়েছে। শামীম ওসমানদের পরিণতি সবার সামনে, যারা সন্ত্রাস করে তাদের শক্তি শেষ হয়ে যায়। যারা নারায়ণগঞ্জে অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের বিচারের দাবি জানাই।”

মুনা বলেন, “এই দেশের বুকে শেখ হাসিনার মতো দখলদারের ঠাঁই হয়নি। নতুন কোনো দখলদার তৈরি হলেও তাদের ঠাঁই হবে না। এই বাংলাদেশ হকার-রিকশাচালক, মজুর-শ্রমিক, কৃষক-ছাত্রদের। এই বাংলাদেশকে জনতার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আজ দলীয় স্বার্থে কেউ নির্বাচন এগিয়ে নিতে চায়, কেউ পিছাতে চায়। কিন্তু ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের জন্য। সুতরাং নির্বাচন কবে হবে, সংস্কার আগে হবে কি পরে হবে—এই সিদ্ধান্ত এখন জনতার।”

সংস্কার ও নির্বাচনের প্রশ্নে ফারহানা মুনা বলেন, “বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর সংস্কার ও নির্বাচনের সমন্বয়ের মাধ্যমেই সম্ভব। ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তন ছাড়া কোনো বাস্তব পরিবর্তন আসবে না। এই লড়াই চলবে যতদিন না পর্যন্ত জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রের পূর্ণ বিজয় ঘটে। বিজয় না আসা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না, জীবন দেব—কিন্তু আপোস করব না।”

গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজনের সভাপতিত্বে ও জেলার নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাসের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী বিপ্লব খান, নির্বাহী সমন্বয়কারী পপি রাণী সরকার, জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী আলমগীর হোসেন আলম, প্রচার সম্পাদক শুভ দেব, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির জেলা আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

সমাবেশ শুরুর আগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ৫৪ জনের ছবি সম্বলিত একটি 'শহিদী মার্চ' নারায়ণগঞ্জ শহর প্রদক্ষিণ করে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়