২৭ আগস্ট ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:৪১, ২৬ আগস্ট ২০২৫

নারায়ণগঞ্জ-৩, ৪ ও ৫ আসনের সীমানা: গণশুনানিতে নেতাদের আপত্তি

নারায়ণগঞ্জ-৩, ৪ ও ৫ আসনের সীমানা: গণশুনানিতে নেতাদের আপত্তি

নারায়ণগঞ্জ-৩, ৪ ও ৫ আসনের সীমানা পুননির্ধারণের সুপারিশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত গণশুনানিতে নিজেদের মত জানিয়েছেন রাজনৈতিক নেতারা। তারা সবাই বন্দর উপজেলাকে ভেঙে দু’টি আসনের সঙ্গে যুক্ত করার সুপারিশের বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে ঢাকার নির্বাচন কমিশনে নারায়ণগঞ্জের তিনটি আসনের সীমানা নিয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত ৩০ জুলাই তিন আসনের সীমানা পুনরায় নির্ধারণের সুপারিশ করে গ্যাজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।

এ সুপারিশের বিষয়ে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল করিম, জামায়াত ইসলামীর মহানগর কমিটির সাবেক আমীর মাওলানা মাঈনুদ্দিন আহমাদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, বিএনপির মহানগর আহবায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালামের কন্যা অ্যাডভোকেট শামসুন নূর বাঁধন প্রমুখ।

নির্বাচন কমিশনের সুপারিশে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সঙ্গে যুক্ত থাকা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের নয়টি ওয়ার্ড বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সঙ্গে থাকা সদর উপজেলার দু’টি ইউনিয়ন যুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন বিভক্ত করার সুপারিশে আপত্তি জানিয়ে গত ৬ আগস্ট কমিশনে আবেদন করেন।

গণশুনানিতে তিনি বলেন, “আসন বিভাজনের সময় যথাযথ ক্রাইটেরিয়া অনুসরণ করা হয়নি। সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ আইনের বেশকিছু ধারা মানা হয়নি। নারায়ণগঞ্জ-৪ ও ৫ আসন বিভাজনের মধ্য দিয়ে প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে গেছে। সদর ও বন্দর উপজেলা ভেঙে যাবে। ভৌগলিক দিক থেকেও এ বিভাজন যথাযথ নয়।”

তিনি আরও বলেন, “বিভাজনের ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ভোটার সংখ্যা বেশি উল্লেখ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে আসনটি বিভক্ত না করে আরেকটি আসন সৃষ্টি করা যেতে পারে অন্যথায় যেভাবে ছিল সেভাবেই রাখা ভালো। বিগত সময়ে মানুষ ভোট দিতে পারেনি, জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মানুষ ভোটের প্রতি আশাবাদী। কিন্তু আসন বিভক্ত হওয়ার কারণে মানুষ বঞ্চিত মনে অনুভব করবে।”

মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বন্দর উপজেলাকে ভাগ না করার বিষয়ে মতামত দেন। তিনি বলেন, “নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে বন্দর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন কেটে সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ-৩) আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এতে রাজনৈতিক, সামাজিক ও ভৌগোলিকভাবে বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মানুষ।”

বিষয়টি তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে ধরেছেন জানিয়ে বলেন, “একটা বিরাট অংশ বিভক্ত হয়ে সোনারগাঁওয়ের সঙ্গে চলে গেলে দীর্ঘদিনে তৈরি হওয়া নেতা-কর্মীদের মধ্যে অনেকে বঞ্চিত হবেন। প্রশাসনিক অখন্ডতার কথাও এখানে পুরোপুরি লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আশা করি নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আমাদের দাবি পুনর্বিবেচনা করবে।”

শুনানিতে জামায়াত নেতা মাওলানা মাঈনুদ্দিন আহমাদ ও বিএনপির সাবেক সংসদ রেজাউল করিমও এ বিষয়ে একমত বলে জানান।

বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু বলেন, “শুনানিতে আমরা বন্দরের সর্বস্তরের মানুষ ঐক্যমতে পৌঁছে বলেছি, কোনো অবস্থাতেই বন্দরকে সোনারগাঁয়ের সাথে সংযুক্ত করা যাবে না। আমরা আমাদের এই দাবিটা নির্বাচন কমিশনারের কাছে উপস্থাপন করেছি। আশা করছি, বন্দর অবিভাজিত এবং আগের মত থাকবে।”

অ্যাডভোকেট শামসুন নূর বাঁধন বলেন, “বন্দরের ইউনিয়নগুলো নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে বিভক্ত করে ৩ আসনের করার বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরি।”

এর আগে এ দাবির পক্ষে দুই হাজারের অধিক বন্দরবাসীর গণস্বাক্ষর কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়