আড়াইহাজার থানা সিপিবির সম্মেলন

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আড়াইহাজার থানা কমিটির সম্মেলন ও পরবর্তী কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সর্বসম্মতিক্রমে লোক নাথ বর্মনকে সভাপতি, রিপন বর্মনকে সাধারণ সম্পাদক এবং দীন-দুনিয়াকে সহ-সাধারণ সম্পাদক করে ১৩ সদস্যবিশিষ্ট থানা কমিটি গঠন করা হয়।
রবিবার (১০ আগস্ট) বিকেল ৪টায় আড়াইহাজার থানার নতুন বান্টি এলাকায় এ সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন থানা সিপিবির সভাপতি লোক নাথ বর্মন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা সিপিবির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, সম্পাদকম-লীর সদস্য আব্দুস সালাম বাবুল, এবং থানা কমিটির নেতা দীন-দুনিয়া ও রিপন বর্মন প্রমুখ।
সম্মেলনে জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম বলেন, “পতিত স্বৈরশাসকের দীর্ঘদিনের দুঃশাসন ও অবিচারে খেটে খাওয়া মানুষসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষের জীবনে সীমাহীন দুর্ভোগ নেমে এসেছে। বৈষম্য চরম আকার ধারণ করেছে, তরুণদের জীবনে বেকারত্বের অন্ধকার নেমে এসেছে। ঘুষ-দুর্নীতি, অর্থপাচার, ব্যাংক জালিয়াতি, গুম-খুন, অপহরণ, ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতা হরণ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান ছিল দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বিস্ফোরণ। ২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী সরকারের পতন ঘটে এবং শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে অন্তর্বর্তী সরকার বিগত এক বছরে গণঅভ্যুত্থানের লক্ষ্য বাস্তবায়নে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার অবসান, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্যোগও দেখা যায়নি।”
বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পরও মব সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, লুটপাট ও হত্যার ঘটনা ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা নাজুক, মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ইউনূস সরকারের মনোযোগ জনগণের স্বার্থে নয়; বরং সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে খুশি করার জন্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো বিদেশীদের কাছে ইজারা দেয়ার কাজে ব্যস্ত। অন্যদিকে স্বাধীনতাবিরোধীরা ২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান ও ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে মুখোমুখি করার চেষ্টা করছে।”
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের লক্ষ্য ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় দেশকে এগিয়ে নিতে সংগ্রাম জোরদার করতে হবে।”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশে স্থিতিশীলতা ফেরাতে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে।”