রবিনটেক্স কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবি রাজেকুজ্জামান রতনের

গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ ও রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ কারামুক্ত শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সংবর্ধনা সভায় ৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল এবং শ্রমিক নিপীড়ক রবিনটেক্স কর্তৃপক্ষকে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন।
শুক্রবার (৯ মে) বিকেল ৫টায় নারায়ণগঞ্জের ২ নম্বর রেলগেটস্থ সংগঠনের জেলা কার্যালয়ে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে এ সংবর্ধনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাফিজুল ইসলাম, বাসদ জেলা কমিটির সদস্য ও নাসিকের সাবেক কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন জেলার সভাপতি হাফিজুর রহমান, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান টিপু, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা ভবানী শংকর রায়, আইনজীবী মাজেদুল হক রাজন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কাদির প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, গত ১৫ এপ্রিল দিবাগত রাতে ফতুল্লার নিজ বাসা থেকে সেলিম মাহমুদকে কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই রূপগঞ্জ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ দুটি মামলায় তাকে আসামি করা হয়। অথচ তার নাম এজাহারে ছিল না। শুধুমাত্র শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনে সংহতি জানানোর কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, গত ৯ এপ্রিল শ্রমিক ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শ্রমিকদের মধ্যে রবিনটেক্স কর্তৃপক্ষ ৭৮ জন শ্রমিককে মামলায় আসামি করে। এর মধ্যে ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ৮ জনকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক রাখা হয়।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, রবিনটেক্স কর্তৃপক্ষ শ্রম আইন ও সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করে ২৯ মার্চ ১৬ জন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করে। অথচ শ্রম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ ছিল, ঈদের আগে কোনো শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা যাবে না। এ ছাড়া শ্রমিক ইউনিয়ন নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও শ্রমিক নেতাদের কারখানায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
গত ৫ মে নারায়ণগঞ্জ জজ আদালত থেকে সেলিম মাহমুদ, সীমা আক্তার, মুন্নী আক্তার মিম, রেহানা, হালিমা আক্তার, সুমন কবির, শেফালী আক্তার ও মিলন জামিনে মুক্তি পান। তবে শ্রমিক সাদ্দাম হোসেনের জামিন মঞ্জুর হয়নি।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, “৭৪ সালের কালো আইন বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করতে হবে। শ্রমিকদের আন্দোলন দমনে এই আইনকে ব্যবহার করা হচ্ছে। শ্রম আইন লঙ্ঘন করে রবিনটেক্স কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের উপর যে নিপীড়ন চালাচ্ছে, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”
নেতৃবৃন্দ সাদ্দাম হোসেনের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ৪০০ চাকরিচ্যুত শ্রমিককে পুনর্বহাল এবং অসৎ শ্রম আচরণের জন্য রবিনটেক্স কর্তৃপক্ষকে শাস্তির দাবি জানান।