যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়: ডিসি

নারায়ণগঞ্জে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এ শহীদ ও আহতদের মায়েদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো ব্যতিক্রমধর্মী আলোচনা অনুষ্ঠান ‘জুলাইয়ের মায়েরা’। শনিবার (২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানে সন্তান হারানো বা আহতদের মায়েরা স্মৃতি, বেদনা ও বিচারের দাবি তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, “মাসব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনে আমরা শহীদদের বাবা, ভাই বা স্ত্রীদের কথা শুনেছি। তবে আজ মায়েদের কণ্ঠে যে বেদনার প্রকাশ শুনলাম, তা আমাদের সবাইকে গভীরভাবে আবেগতাড়িত করেছে। মাকে শান্তনা দেওয়ার মতো কোনো শব্দ পৃথিবীতে তৈরি হয়নি। সন্তান হারানোর কষ্ট রাজ্য দিয়েও মোচন করা যায় না।”
তিনি আরও বলেন, “আপনাদের সন্তান দেশের জন্য রক্ত দিয়েছে, দেশপ্রেমের যে কাব্য তারা রচনা করেছে, আমরা সেই লক্ষ্য পূরণে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়তে চাই। যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়। যদি তা পারি, আজকের এই আর্তনাদ আর শুনতে হবে না।”
আলোচনায় বক্তব্য দেন শহীদ আদিলের মা আয়শা বেগম, শহীদ সাইফুল ইসলামের মা হায়াতুন্নেছা, শহীদ মাওলানা মাবরুর সোয়াইন এর মা শাহানাজ বেগম, এবং আহত মাহবুব আলমের মা হালিমা বেগম।
তারা তাদের সন্তানের নিখোঁজ, নির্যাতন ও হত্যার স্মৃতি তুলে ধরে বিচারের দাবি জানান। মায়েরা বলেন, “আমরা আর কোন বিচারহীনতার শিকার হতে চাই না। শেখ হাসিনাসহ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকলের বিচার চাই।”
অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ইসরাত জাহান (পিপিএম) বলেন, “ঘটনার তদন্ত অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে করা হচ্ছে। আমাদের পক্ষে যতটুকু দায়িত্ব রয়েছে, আমরা তা আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করছি। ইনশাআল্লাহ অচিরেই আমরা আমাদের কাজ সম্পন্ন করতে পারবো।”
আলোচনা শেষে শহীদ ও আহতদের স্মরণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় এবং তাদের পরিবারের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্য ছাড়াও জেলা প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।