২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৫:৫৭, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

স্কুলে স্কুলে পাঠ্যবই বিতরণ শুরু

স্কুলে স্কুলে পাঠ্যবই বিতরণ শুরু

নারায়ণগঞ্জে নতুন শিক্ষাবর্ষকে সামনে রেখে পাঠ্যবই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে সদর উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একযোগে বই বিতরণ চলে, যা বিকেল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে শিক্ষা বিভাগের এই কর্মসূচি ঘিরে ছিল ব্যস্ততা ও উৎসবের আমেজ।

সদর উপজেলার ৮৩ নম্বর ভূইগড় জনকল্যাণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। এখান থেকে উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর জন্য পাঠ্যবই সরবরাহ করা হয়। সকাল থেকেই বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নির্ধারিত সময় অনুযায়ী উপস্থিত হয়ে নিজেদের বিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ বই বুঝে নেন।

বই বিতরণ কার্যক্রম সরেজমিনে তদারকি করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌসি বেগম। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফউদ্দিন বিপ্লব এবং সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. আল্পনা সরকার, নুরুন্নাহার বিউটি, তাসলিমা আখতার, শওকত উল্লাহ ও রেবেকা সুলতানা। তারা প্রতিটি বিদ্যালয়ের চাহিদা অনুযায়ী বই দেওয়া হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করেন।

সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফউদ্দিন বিপ্লব বলেন, এ বছর সদর উপজেলায় বইয়ের মোট চাহিদা ছিল ৬ লাখ ১৫ হাজার ৮৩৮টি। শতভাগ বই ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে। সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয় মিলিয়ে দুই দফায় মোট চারবার বই বিতরণ করা হবে। মঙ্গলবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রথম দফায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আগামী ২৮ ডিসেম্বর পশ্চিম জালকুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বাকি বই বিতরণ করা হবে। জায়গা সংকটের কারণে দুটি বিদ্যালয়ে অস্থায়ীভাবে বই মজুদ রাখা হয়েছে। একইভাবে ২৪ ও ২৯ ডিসেম্বর বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোতে বই বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বর্তমানে সদর উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১২১টি এবং বেসরকারি বিদ্যালয় রয়েছে ৪৮৪টি।

বই বিতরণ প্রসঙ্গে সাইফউদ্দিন বিপ্লব বলেন, পুরো কার্যক্রম অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। লিখিত চাহিদার বাইরে একটি বইও অতিরিক্ত দেওয়ার সুযোগ নেই। সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোচ্ছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, নতুন বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে বিদ্যালয় থেকে নতুন বই হাতে পাবে।

আইলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পবিত্র চন্দ্র বর্মন বলেন, এবার চাহিদা অনুযায়ী শতভাগ বই পাওয়া যাচ্ছে। প্রথম দফায় প্রয়োজনীয় বই সংগ্রহ করেছি। বই আনা–নেওয়ায় কিছুটা কষ্ট হলেও এটি আমাদের কাছে অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর দু–একবার এই কষ্ট হয়, কিন্তু এটাকে আমরা কষ্ট মনে করি না। আমাদের এই পরিশ্রমের বিনিময়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে বসে নতুন বই পাবে, সেই আনন্দের কাছে আমাদের কষ্ট কিছুই না।

সরেজমিনে দেখা যায়, ৮৩ নম্বর ভূইগড় জনকল্যাণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ভিড় জমিয়েছেন। কেউ বইয়ের বান্ডিল গুনে নিচ্ছেন, কেউ তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখছেন। কারও হাতে খাতা, কারও হাতে কলম। নতুন শিক্ষাবর্ষকে ঘিরে সবার মধ্যেই ছিল এক ধরনের প্রস্তুতি ও প্রত্যাশা।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়