‘গণ-অভ্যুত্থানের বিজয় হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে’
গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট ঘোষিত ‘জনতার সনদ/ইশতেহার’ নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় আলী আহম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্টের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদ কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মুস্তাক হোসেন এবং বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা শামীম ইমাম। সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্য সচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব।
এছাড়া বক্তব্য দেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকি মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি, খেলাঘরের উপদেষ্টা রথীন চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হালিম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা ভবানী শঙ্কর রায়, অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ, অ্যাডভোকেট প্রদীপ ঘোষ বাবু, শিবনাথ চক্রবর্তী, সোলেমান দেওয়ান, রঘু অভিজিৎ রায়, ধীমান সাহা জুয়েল, সালাউদ্দিন আহমেদ, সেলিম মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম ও আল মামুন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশ আজ এক ক্রান্তিকালীন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বছরখানেক আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রায় দেড় যুগ ধরে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতন ঘটানো হয়েছে। তবে বর্তমানে দেশ কোন পথে এগোবে-পুরোনো অপশাসনের নতুন রূপ, না কি চরম ডানপন্থী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান, নাকি জনগণের স্বার্থ রক্ষায় একটি বামপন্থী-প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক পথ- এই সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে দেশ।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়- গণসংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জিত হলেও বারবার তা জনগণের হাতছাড়া হয়েছে। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের ১৫ মাস পর দেখা যাচ্ছে, এই বিজয়ও বহুলাংশে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সর্বদলীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন না করে সংবিধান বহির্ভূতভাবে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করছে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করছে। একই সঙ্গে জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষা করে জনগণকে না জানিয়ে লাভজনক বন্দর বিদেশি সাম্রাজ্যবাদী কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
বক্তারা বলেন, দেশ যে গভীর সংকট, নৈরাজ্য, দুর্নীতি, লুণ্ঠন ও অধিকারহীনতার মধ্যে রয়েছে, তা থেকে মুক্তি পেতে হলে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার ভিত্তিতে মৌলিক পরিবর্তন অপরিহার্য। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধানের চার মূলনীতি এবং নব্বই ও চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যবিরোধী আকাঙ্ক্ষাকে ভিত্তি করে জনগণের নিজস্ব রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।
এই লক্ষ্যেই দেশের অধিকারহারা, বঞ্চিত, শোষিত ও অবহেলিত মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণে ‘গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট’ গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সভায় ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দ।





































