গণসংহতির “জুলাই সমাবেশ ও শহীদী মার্চ” শুক্রবার

নারায়ণগঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে “জুলাই সমাবেশ ও শহীদী মার্চ” কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণসংহতি আন্দোলন। সংগঠনটি আগামী ১৮ জুলাই শুক্রবার বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এই সমাবেশের আয়োজন করেছে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরেন গণসংহতি আন্দোলনের জেলা ও মহানগর নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-তরুণদের নেতৃত্বে সারাদেশে একটি ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়, যার অন্যতম কেন্দ্রস্থল ছিল নারায়ণগঞ্জ। ১৮ জুলাই চাষাঢ়ায় পুলিশের হামলার পর শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে প্রতিরোধ আন্দোলন, যেখানে সাধারণ মানুষ, শ্রমিক, তরুণ, নারী ও শিশুরাও যুক্ত হয়।
গণসংহতির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট) পর্যন্ত চলা এই আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জে শহিদ হন অন্তত ৫৬ জন, যাদের মধ্যে শিশু রিয়া গোপ, আমানত, সজনসহ অনেকে ছিলেন। সেই রক্তাক্ত অধ্যায়ের এক বছর পূর্তিতে শহিদদের স্মরণ, গণহত্যার বিচার, আহতদের পুনর্বাসন এবং রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিতে এই কর্মসূচি আহ্বান করা হয়েছে।
নেতারা বলেন, “৭১ সালের মতোই ২০২৪-এর জুলাই ছিল নতুন বাংলাদেশের ডাক। শহিদদের রক্তের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই পুরনো ফ্যাসিবাদ-সমর্থক রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গঠনের সময় এখনই।”
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তার নেতৃত্বে আন্দোলন এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন—জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, নির্বাহী সমন্বয়ক অঞ্জন দাস, আলমগীর হোসেন আলম, মহানগর সমন্বয়ক নিয়ামুর রশিদ খান বিপ্লব, নির্বাহী সমন্বয়ক পপি রানী সরকার প্রমুখ।
মহানগর সমন্বয়ক বিপ্লব বলেন, “আশা করছি ১৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন হবে। চারটি রাজনৈতিক দল ওইদিন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যারা প্রত্যেকেই অভ্যুত্থান-সংঘটিত শক্তির অংশ বলে আমরা মনে করি। নিরাপত্তাজনিত কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না বলেই আমরা আশা করছি।”
গণসংহতি আন্দোলনের নেতা অঞ্জন দাস বলেন, “অভ্যুত্থান কোনো গোষ্ঠীর একক সম্পদ নয়। একাত্তরকে যেমন আওয়ামী লীগ নিজেদের সম্পত্তিতে রূপান্তর করেছিল, তেমনভাবে কেউ কেউ এখন জুলাই আন্দোলনকে নিজেদের মালিকানায় নিতে চাইছে—এটি ফ্যাসিবাদী ধারা ছাড়া কিছু নয়।”
জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন বলেন, ”নারায়ণগঞ্জে গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী যে দুঃশাসন, ওসমান পরিবারের যে দুঃশাসন সেটার বিরুদ্ধে গণসংহতি আন্দোলন কথা বলেছে। এখন অভ্যুত্থান এর দাবিদার কিংবা অভ্যুত্থান এর চ্যাম্পিয়ন শক্তির অনেকে আছেন যারা ওসমান পরিবার থেকে টাকা পয়সা খেয়ে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে।“