শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে শ্রমিক প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৫টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এ শ্রমিক সমাবেশ ও শহরে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লবের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি জামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এস এম কাদির, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সহ-সভাপতি হাসনাত কবীর, সহ-সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সোহাগ, গাবতলী-পুলিশ লাইন শাখার সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জুলাই গণ অভ্যুত্থানে ছাত্ররা আন্দোলনের সূচনা করলেও এক পর্যায়ে ব্যাপক শ্রমিকের অংশ গ্রহণ আন্দোলনকে সফলতার দিকে নিয়ে যায়। আন্দোলনে দুই সহস্রাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। এর অধিকাংশই ছিল শ্রমিক। বিগত সাড়ে ষোল বছর স্বৈরাচারি শাসনামলে শ্রমিকদের উপর ব্যাপক দমন পীড়ন হয়। ফ্যাসিস্ট শাসনের সময়ে মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন করায় ৪ জন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করা হয়। ন্যায্য মজুরি, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদান, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন, রেশন আবাসন, চিকিৎসাসহ শ্রমিকদের কোন ন্যায্য দাবি মেনে নেয়নি ফ্যাসিস্ট সরকার। ফলে স্বৈরাচার হটাতে অকাতরে জীবন দিয়েছে শ্রমিকরা।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, স্বৈরাচার পতনের পর অন্তবর্তী সরকারের কাছে শ্রমিক তথা মানুষের অনেক প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু এ সরকারের সময়েই তিনজন শ্রমিক গুলিতে জীবন হারিয়েছে। কারখানা বন্ধ হয়ে লক্ষাধিক শ্রমিক কাজ হারিয়েছে। বিভিন্ন কারখানায় চলছে ব্যাপক শ্রমিক ছাঁটাই। শ্রমিক আন্দোলন দমনে চলে লাঠিপেটা, মিথ্যা মামলা। মালিকরা শ্রম আইনের কালো ধারা ব্যবহার করে প্রাপ্য পাওনা থেকে শ্রমিকদের বঞ্চিত করছে। শ্রমিকরা আইন মোতাবেক ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে চাইলে অদৃশ্য কারণে ইউনিয়ন দেয়া হয় না। ইউনিয়ন গঠনের উদ্যোক্তা শ্রমিকদের করা হয় ছাঁটাই। দ্রব্য মূল্যে ঊর্ধ্বগতির সময়ে শ্রমিকের রেশন, আবাসন, বিনা মূল্যে চিকিৎসার দাবি উপেক্ষিত। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে দেশের প্রায় ৯০ ভাগ শ্রমিক, তাদের কোন আইনি সুরক্ষা নেই। অন্তবর্তী সরকার একটি শ্রম সংস্কার কমিশন করেছে। শ্রম সংস্কার কমিশন ইতোমধ্যে ২৫ দফা সুপারিশ সরকারের কাছে দিয়েছে। শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের কোন উদ্যোগ বা আলোচনা সরকারের পক্ষ থেকে দেখা যাচ্ছে না।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন নিশ্চিত করাসহ ২৫ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও গণ অভ্যুত্থানের চেতনা বৈষম্যহীন সমাজ তথা সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।