১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ:

প্রকাশিত: ১৯:০২, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভোরের হাঁকডাকে জমে ওঠে শতবর্ষী পুরোনো মাছের বাজার

ভোরের হাঁকডাকে জমে ওঠে শতবর্ষী পুরোনো মাছের বাজার

ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখর হয়ে ওঠে নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী তিন নম্বর ঘাটের মাছ বাজার। শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে, রেলস্টেশন, বাসটার্মিনাল ও লঞ্চঘাটের পাশে অবস্থিত এই বাজারটি শতবর্ষ পুরোনো বলে জানান স্থানীয়রা। প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা, যেখানে পাইকারি দরে মাছ কিনতে ভিড় করেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ক্রেতারা।

সরজমিনে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোরে দেখা যায়, বাজারে দেশি বোয়াল, পদ্মার ইলিশ, পাবদা, বড় রুই, তেলাপিয়া, রুপচাঁদা, দেশি শিং, নদির চিংড়ি, সাদা পোয়া, টুনা, গলদা চিংড়ি, দেশি টেংনা ও পাঙ্গাসসহ নানা প্রজাতির মাছের সমাহার।

এসব মাছ আসছে চাঁদপুর, সিলেট, হাতিয়া, সন্দীপ, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও রাজশাহীর মতো এলাকা থেকে। এখান থেকে আবার জেলার বিভিন্ন বাজারে মাছ সরবরাহ করা হয়।

মাছ বিক্রেতা সুমন মিয়া বলেন, “আমি সিলেট থেকে নদীর মাছ এনে আট বছর ধরে ব্যবসা করছি। এখন মাছ আছে, কিন্তু ক্রেতা কিছুটা কম।”

তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে মাছের প্রাচুর্য থাকলেও বেশি ভিড়ের কারণে দামের তারতম্য হচ্ছে। শহরের দেওভোগের গণেশচন্দ্র দে বলেন, “মাছ আছে, কিন্তু ক্রেতা বেশি হওয়ার কারণে দাম একটু বেশি রাখে।”

এদিকে আড়তের এক কোণে পদ্মার ইলিশ সাজিয়ে বসা মন্টু বর্মন বলেন, “এবার আমদানি কম হওয়ায় ইলিশের দাম বেড়েছে। তবে শুক্রবার বলে আজকে ক্রেতা বেশি।”

ফতুল্লা থেকে আসা চাকুরিজীবী হাসিবুর রহমান বলেন, “প্রতি মাসে সময় করে একবার আসি। নিজের চোখে দেখে মাছ কিনতে স্বস্তি লাগে।”

বাজার কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান জানান, “এটি নারায়ণগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় মাছ বাজার। প্রতিদিন প্রতিটি আড়তে মাছ থাকে। প্রায় কোটি টাকার বেচাকেনা হয়। এখানে প্রায় ৬৮ জন আড়ৎদার ব্যবসা করেন। তবে এতো বড় বাজার হয়েও বিক্রেতা-ক্রেতাদের নিরাপত্তা নেই। আমরা চাই, কর্তৃপক্ষ এসে এই বাজারের দিকে নজর দিক।”

স্থানীয়রা বলছেন, শতবর্ষের এই ঐতিহ্যবাহী বাজার শুধু ব্যবসা নয়, নারায়ণগঞ্জের প্রাণের অংশ। ভোরের হাঁকডাকে জমে ওঠা এই বাজার এখনো ধরে রেখেছে তার ঐতিহ্য ও ব্যস্ততা।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়