বিকেএমইএ’তে হাতেমের পূর্ণ প্যানেলের জয়

প্রায় এক যুগ পর নিট পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেলে জয় পেয়েছেন সদ্য সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
শনিবার (১০ মে) দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি শহরের চাষাঢ়ায় বিকেএমইএ’র প্রধান কার্যালয়ে এ ফলাফল ঘোষণা করেন। এর আগে সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ।
হাতেমের নেতৃত্বে ‘প্রোগ্রেসিভ নীট অ্যালায়েন্স’ এ সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন। এ প্যানেলের প্রধান মোহাম্মদ হাতেম ভোটের হিসেবে দশম হয়েছেন। যদিও এ প্যানেলের নেতা হিসেবে আবারও এ ব্যবসায়ী সংগঠনের সভাপতি হতে যাচ্ছেন আছেন তিনি।
ফলাফল অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ৪০৮ ভোট পেয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন রিপন। এছাড়া, ফকির কামরুজ্জামান নাহিদ ৪০৬, আশিকুর রহমান ৪০৫, এম. ইসফাক আহসান ৪০৫, আহমেদ নূর ফয়সাল ৪০৪, আহসান খান চৌধুরী ৪০৪, মো. আব্দুল হান্নান ৪০৪, মো. মহসিন রাব্বানি ৪০৪, মো. শাহরিয়ার সাইদ ৪০৪, মোহাম্মদ হাতেম ৪০৩, ইঞ্জিনিয়ার ইমরান কাদের তুর্য ৪০৩, মোহাম্মদ শামসুল আজম ৪০২, গাওহার সিরাজ জামিল ৪০১, আব্দুল বারেক ৪০১, মো. জামাল উদ্দিন মিয়া ৪০১, মো. মনিরুজ্জামান ৪০১, মো. সামসুজ্জামান ৪০১, মোহাম্মদ রাশেদ ৪০১, ফজলে শামীম এহসান ৪০০, মনসুর আহমেদ ৩৯৯, মো. মামুনুর রশিদ ৩৯৯, খন্দকার সাইফুল ইসলাম ৩৯৮, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ৩৯৮, মো. ইয়াসিন ৩৯৭, রাজীব চৌধুরী ৩৯৭, ফওজুল ইমরান খান ৩৯৬, মোহাম্মদ জাকারিয়া ওয়াহিদ ৩৯৬, মো. মোরশেদ সারোয়ার ৩৯৩, মোহাম্মদ সেলিম ৩৯১, মিনহাজুল হক ৩৮৬, অমল পোদ্দার ৩৮০, রাকিব সোবহান মিয়া ৩৭৪, সালাহ উদ্দিন আহমেদ ৩৭০, নন্দ দুলাল সাহা ৩৫৪, রতন কুমার সাহা ৩৩৮ ভোট পেয়েছেন।
অনির্বাচিত তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী জিএম হায়দার আলী ১৬৩, মো. শাহজাহান আলম ১৫৩ ও মনির হোসেন শেখ ১৪০ ভোট পেয়েছেন।
ঢাকার বাংলামোটর ও নারায়ণগঞ্জের বিকেএমইএ ভবনের আলাদা দু’টি ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলে। এবারের নির্বাচনে ৫৭২ জন ভোটারের মধ্যে ৪৩১ জন ভোট দিয়েছেন। এরমধ্যে ২৩টি ভোট বাতিল ঘোষণা করা হয়। বিকেএমইএ’র ৫৭২ ভোটের মধ্যে নারায়ণগঞ্জে ২৭২, ঢাকায় ২২৪ ও চট্টগ্রামে ৭৬ জন।
এর আগে সবশেষ ২০১২ সালে বিকেএমইএ'র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিগত মেয়াদে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সভাপতি নির্বাচিত হতেন। গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে সেলিম ওসমান আত্মগোপনে চলে যান। পরে আত্মগোপনে থাকা অবস্থাতেই পদত্যাগপত্র পাঠান এবং মোহাম্মদ হাতেমকে পরবর্তী সভাপতি করার পরামর্শ দেন। পরে বোর্ডের সিদ্ধান্তে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন মোহাম্মদ হাতেম। তিনি সেলিম ওসমানের নেতৃত্বের কমিটিতে নির্বাহী সভাপতি ছিলেন।
‘ওসমান পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠতার’ অভিযোগ থাকলেও এবারের নির্বাচনে ৩৫ জনের প্যানেল ঘোষণা করেন হাতেম। তাদের প্যানেলের বিপরীতে পূর্ণ কোনো প্যানেল দেওয়া হয়নি। তবে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়েন তিনজন প্রার্থী।
জয়ের পর ‘প্রোগ্রেসিভ নীট অ্যালায়েন্স’-এর নেতা মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “অনেকদিন পর উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। সকল মালিকরা সুন্দর পরিবেশে ভোট প্রদান করেছেন। আমরা এই সুন্দর পরিবেশটা উপভোগ করেছি। ১৯৯৯ সালের ৫ ডিসেম্বর বিকেএমইএর জন্ম হয়। তখন থেকেই আমি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তারই প্রতিদান আজ সকল সদস্যরা আমাকে দিয়েছে।”