পরিবারের কাছে ফেরা হলো না প্রবাসী মাসুদের
কিছুদিন আগেই সিঙ্গাপুর থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন প্রবাসী মাসুদ রানা। দেশে ফিরে ড্রাইভিং শিখছিলেন তিনি। প্রতিদিনের মতো শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে স্ত্রীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গিয়েছিলেন ড্রাইভিং অনুশীলনে। অনুশীলন শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। ফোনে স্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়েও ছিলেন তিনি। কিন্তু এর ঘণ্টাখানেক পরেই খবর আসে মাসুদ নিখোঁজ। নদী পারাপারের সময় ফেরি থেকে পড়ে তলিয়ে গেছে সে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে ৯টায় ধলেশ্বরী নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফেরি পারাপারের সময় একটি ট্রাকের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ওই ট্রাকসহ পাঁচটি যান নদীতে পড়ে যায়। এ সময়ই পানিতে পড়েন মাসুদসহ তিনজন।
এদিকে ১০টায় উদ্ধার অভিযান শুরু করে নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ড উদ্ধারকারী দল।
খবর পেয়ে বক্তাবলী ঘাটে এসে জড়ো হয় মাসুদ রানার স্বজনরা। আকস্মিক এই ঘটনায় ভেঙ্গে পড়েন তারা। নদীর পাড়ে দীর্ঘ চার ঘণ্টার অপেক্ষার পর রাত ২টায় উদ্ধার হয় মাসুদ রানার নিথর মরদেহ।
প্রবাসী মাসুদ রানার মা পারভিন আক্তার বলেন, “গত ২৫ দিন আগে মাসুদ রানা সিঙ্গাপুর থেকে দেশে এসেছে। সে নারায়ণগঞ্জ শহরে ড্রাইভিং শিখতে শুরু করেছিল। ড্রাইভিং শিখে রাতে বাড়ি ফিরছিল। ঘাটে এসে তার স্ত্রীকে ফোন করে বলে, আমি ফেরিতে উঠছি বাসায় চলে আসছি। কিছুক্ষণ পর জানতে পারি ফেরিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকেই মাসুদের মোবাইল বন্ধ।”
এ দুর্ঘটনায় মাসুদ রানাসহ তিনজন মারা যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম জানান, ফেরি চালক কাউকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কেউ নদীর কোথায় যান ডুবেছে তা নিশ্চিত করে জায়গা দেখাতে পারেনি। নদীতে ডুবে যাওয়া স্থান শনাক্ত ও নদীর গভীরতা মেপে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ঘটনায় সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. রায়হান কবির। তিনি বলেন, “এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাইমা ইসলামকে প্রধান করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই সাথে তাদের আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।”





































