অনেক রাজনৈতিক দলের পাখা গজিয়েছে: সাখাওয়াত

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, “বিএনপি ক্ষমতায় আসবে বলে এখন অনেক রাজনৈতিক দলের পাখা গজিয়ে গেছে। তারা আজকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাই আপনাদের সজাগ থাকতে হবে। এসকল অপপ্রচার চালিয়ে অপ্রচারকারীরা যেন সফল হতে না পারে।”
রোববার (১৩ জুলাই) বিকেল চারটায় বন্দর বাজারের একটি কমিউনিটি সেন্টারে ২২নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টি ও ইসলামী আন্দোলনের সমালোচনা করে বিএনপি নেতা বলেন, “গত ১৫ বছরের বেশী সময় ধরে জামায়াতে ইসলামকে আমাদের সাথে রেখেছি। গত ২০১৮ সালে জামায়াতের কোনো মার্কা ছিলো না। তাঁরা আমাদের ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলো। ওনাদের অনেক বোঝা আমরা বহন করেছি। তাদের বোঝা বহন করতে গিয়ে আমাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অনেক বদনামের শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু তারা আজকে ধোয়া তুলসীপাতা সাজতে চাচ্ছে। এখন তারা আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।”
তিনি ইসলামী আন্দোলনের পীর সাহেবকেও কটাক্ষ করে বলেন, “আর ইসলামী আন্দোলন তাঁরাও আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পীর সাহেবের কথা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমের হয়। একসময় পীর সাহেব জামায়াতকে নিয়ে নানা কটাক্ষ করতো এখন তারা তাদেরকে কোলে তুলে নিয়েছে। আর আরেকটি দল যারা গত মাসে নিবন্ধন পেয়েছে। নিবন্ধন পেয়েই যেন বাংলাদেশকে হাতে পেয়ে গেছে। যাদের এতদিন রক্ষা করেছি, নিজেদের সাথে রেখেছি তারা যদি এসব অপবাদ দেয় তাহলে কি ক্ষমা করা যায়?”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এই জুলাই বিপ্লবে তিন দলেরই অবদান ছিল। বিপ্লবীরা বিভক্ত হলে তার সুফল পাবে পতিত স্বৈরাচার। দেশজুড়ে যা ঘটুক, এই তিন দলকে তার দায় নিতে হবে।”
তিনি বলেন, “বলেছেন, “বিএনপির পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের আমরা মূল্যায়ন করতে চাই। তারা গত ১৫ বছর রাজপথে থেকে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে, হামলা-মামলা, জেল-নির্যাতনের শিকার হয়েও আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে। এই সময়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত পরিহার করে জনগণের পাশে থাকতে হবে। শুধুমাত্র দলের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারবে না—জনগণের ভোটও প্রয়োজন।”
সাখাওয়াত হোসেন খান আরও বলেন, “সাড়ে ৪ হাজার নেতাকর্মীকে বহিষ্কার ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। যারা এখনো দলের বদনাম করছেন, তারা সাবধান হয়ে যান—ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কাউকে ছাড় দেবেন না।”
মনোনয়ন প্রসঙ্গে সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, “দলীয় মনোনয়নে আমাদের কোনও বিরোধ নেই। বিরোধ শুধু সুসময়ের মৌমাছিদের সঙ্গে। তারা মধু খেতে এসেছে, মনোনয়ন চায়, পাবে না—তারা চলে যাবে। আর যদি পায়ও, তখন তাদের দরজায় যেতে গেট পার হতে হবে। কিন্তু যারা এত বছর রাজপথে ছিল, তাদের দরজায় যেতে কষ্ট হবে না।”
তিনি বলেন, “গত ১৬ বছর যারা প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত ছিল, মনোনয়ন দিতে হবে তাদের মধ্য থেকেই।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন—নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. জাকির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, সদস্য ডা. মজিবুর রহমান, বন্দর থানা বিএনপির আহ্বায়ক শাহেনশাহ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক রানা।
উপস্থিত ছিলেন—বন্দর থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ পনেছ, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল খান বাবু, ২২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শিবুদাস, সাধারণ সম্পাদক রাসেল বেপারী, সিনিয়র সহ-সভাপতি সানোয়ার হোসেন প্রমুখ।